রায়গঞ্জ: অশিক্ষক কর্মচারী ও অধ্যাপকের বচসায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। বুধবার এই ঘটনাটি ঘটে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অশিক্ষক কর্মী তপন নাগ ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক দেবাশিস বিশ্বাস বচসায় জড়িয়ে পড়েন। তপনবাবু তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির জেলা সভাপতি এবং দেবাশিসবাবু টিচার্স কাউন্সিলের সভাপতি। দেবাশিসবাবু জানান, জেলা প্রশাসনের তরফে ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস পালন করা হবে। সেজন্য তাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আজ সেই মিটিং জেলা শিক্ষা আধিকারিকের দপ্তরে তিনি ডেকেছিলেন। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের অধ্যাপক, শিক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবকেরা অপেক্ষা করছিলেন সেখানে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রওনা দেওয়ার সময় তপনবাবু তাঁর দিকে এগিয়ে যান এবং গালিগালাজ করতে থাকেন বলে অভিযোগ। দেবাশিসবাবুর দাবি, কোনও বচসা হয়নি। এক তরফা গালিগালাজ হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, বিজেপি, আরএসএস করতে দেবেন না, এইসব অপ্রাসঙ্গিক কথা বলেছেন তপনবাবু। তাঁর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অভিযোগ, তপনবাবু এর আগে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন। উপাচার্য নাকি টাকা নিয়ে কাজ করেন। তা সত্ত্বেও উপাচার্য কিছু করেননি।
যদিও এবিষয়ে তপনবাবুর পালটা অভিযোগ, দেবাশিসবাবুর বিরুদ্ধে একাধিক রেকর্ড আছে। তিনি কলেজ থাকাকালীন এই শিক্ষককে গুলি করবেন, ওই শিক্ষককে মারবেন বলে হুমকি দিতেন। বিগত উপাচার্য অনিল ভুঁইমালি ওঁনার বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তপনবাবুর দাবি, ‘আজ যখন আমাদের এক অশিক্ষক কর্মচারী মানিকের দাঁড়ি ধরে ছিড়ে দেব বলে মজা করছিলাম, সেই সময় দেবাশিসবাবু হঠাৎ আমাকে মারতে আসেন। উনি বেআইনিভাবে ১৮ থেকে ২০ জন শিক্ষকদের নিয়ে বিজেপির টিচার্স কাউন্সিলের ইউনিট খুলেছেন। সরকারের কোনও অ্যাপ্রুভাল নেই। উনি সব সময় গলাবাজি করেন। আমার সঙ্গেও করতে চেয়েছিলেন। বিজেপির ইউনিট খুলে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।’ এদিন দু’জনের বিরোধ থামাতে এগিয়ে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা, বাণিজ্য ও আইন বিভাগের ডিন প্রশান্ত কুমার মহলা। উপাচার্য দীপক কুমার রায় জানান, তিনি সেইসময় একটি মিটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তবে সমস্ত বিষয় শুনেছেন। যদিও কেউ তাঁকে কোনও লিখিত অভিযোগ জানাননি। আগামীকাল পর্যন্ত দেখা হবে। এরপর সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ কোনওভাবেই নষ্ট করা যাবে না।