গৌরহরি দাস, কোচবিহার: এতদিন আড়ালে আবডালে চললেও এখন আর কোনও আড়ালই রইল না। কর বৃদ্ধি প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত হয়ে যাওয়ায় কোচবিহার (Coochbehar) পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (Rabindra Nath Ghosh) কাউন্সিলার তথা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের (হিপ্পি) (Abhijit Dey Bhowmik) ওপর প্রচণ্ড চটেছেন। মঙ্গলবার কোচবিহার পুরসভায় বোর্ড মিটিং শেষে কর প্রসঙ্গ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রবি হিপ্পিকে ‘কলির কালিদাস’ বলে কটাক্ষ করেন।
রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘উনি কলির কালিদাস। গাছের যে ডালে বসেন সেটাই কাটেন। পুরসভা কীভাবে চলবে, আগামীদিনে কীভাবে পুরসভার কর্মীদের পেনশন বা গ্র্যাচুইটি দেওয়া হবে সে বিষয়ে তাঁর কোনও মাথাব্যথাই নেই। উনি কলির কালিদাসের মতোই কাজ করছেন বলে আমি বলতে বাধ্য হলাম।’ এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে হিপ্পির সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, ‘চেয়ারম্যান যা বলেছেন, ঠিকই বলেছেন। তবে শহরবাসী খুব খুশি।’
সম্প্রতি রাজ্য ভ্যালুয়েশন বোর্ড কোচবিহার শহরের বাড়িঘর ও দোকানপাটের ওপর করের পরিমাণ কিছুটা বাড়িয়েছে। যা নিয়ে শহরের বাসিন্দাদের একটা অংশের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে। এই অবস্থায় সোমবার কোচবিহারের রাসমেলার মাঠে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমার কাছে একটা আবেদন এসেছে। আমি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে কথা বলেছি, হিপ্পির সঙ্গেও কথা বলেছি। ভ্যালুয়েশন বোর্ড নাকি ২০১৫ সালের পর কোচবিহারে কোনও কর বৃদ্ধি করেনি বা ভ্যালুয়েশন হয়নি। তাই যাঁদের বাড়িতে নোটিশ যাচ্ছে, তাঁদের বলব নোটিশটা এখন স্টপ করে দিতে। এখন কোনও কর বাড়বে না। এটার ব্যাপারে যা কথা বলার আমি বলে নেব।’ রাজনৈতিক মহলের ধারণা, হিপ্পিই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ওই আবেদন করেছিলেন।
করের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রবি বলেন, ‘পুরোনো দিনে যা কর ছিল এখনও সেটাই রয়েছে। করের পরিমাণ এক পয়সাও বাড়ানো হয়নি। ২০১৫ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ৭২১টা হোল্ডিংয়ের অ্যাসেসমেন্ট হয়েছে। সেটারই চিঠিপত্র, নোটিশ নাগরিকদের কাছে গিয়েছে। এবিষয়ে চার হাজার নাগরিক আবেদন করেছেন। ভ্যালুয়েশন বোর্ডের আধিকারিকরা যখন আসবেন তখন সবার সঙ্গে আলোচনা করে হিয়ারিংয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমাদের কাউন্সিলারের আবেদনের ভিত্তিতেই মুখ্যমন্ত্রী ওই হিয়ারিং স্থগিত রাখার কথা বলেছেন। ওই নির্দেশ অনুযায়ী আমরা আপাতত নোটিশ জারিটা স্থগিত রাখলাম।’ ব্যবসায়ী সমিতির আবেদন অনুযায়ী দোতলা-তিনতলা বাড়ির বিল্ডিং ট্যাক্স আড়াই টাকা থেকে কমিয়ে দুই টাকা করা হল বলে রবীন্দ্রনাথ জানিয়েছেন। এদিন হিপ্পির বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের বক্তব্যের জেরে জল কোনদিকে গড়ায় সেদিকেই সবার নজর।