বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: দলে থেকে জমি কারবারে যুক্ত থাকা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। একই বার্তা দিয়েছিলেন দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তারপরেও জমি চুরি বন্ধ হয়নি। একরাতেই গায়েব খাস জমি। চুরি করা জমিতে টিনের দেওয়াল তুলে ছোট ছোট প্লটে বিক্রি করা হবে। এমনই পরিকল্পনা মাফিয়াদের। কয়েক বছর ধরে এটাই হয়ে আসছে রায়গঞ্জ (Raiganj) শহর লাগোয়া কমলাবাড়িতে। জমি মাফিয়াদের (Land Mafia) দাপট থেকে মুক্তি চাইছে এলাকার মানুষ। জমি চোর এবং দলের প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে মাঠে তৃণমূলের (TMC) সভানেত্রী সোনা টপ্নো।
জমি চুরি হচ্ছে ১৩ নম্বর কমলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। বিস্ফোরক তথ্য হল, এই এলাকাতেই রয়েছে জেলা শাসকের দপ্তর। রয়েছে প্রশাসনিক ভবন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তাদের আবাসন। রায়গঞ্জ মেডিকেলের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস এখানেই। বিশাল এলাকাজুড়ে বিএসএফের প্রশাসনিক ভবন। উন্নয়নের হাত ধরে জমি এখানে সোনার থেকে মহার্ঘ। তাই ফাঁকা পড়ে থাকা সরকারি জমিকেই টার্গেট করছে মাফিয়ারা। দখল করে চলছে বিক্রি করার পালা।
কোনও রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ না করতে চাইলেও, কমলাবাড়ি ১ ও ২ নম্বর পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা স্বীকার করে নিয়েছেন খাস জমি লুঠ করে বিক্রি করে দেওয়া। এলাকার বাসিন্দা স্বপন সরকার জানিয়েছেন, জমির কারবার নিয়ে মাঝেমধ্যেই এলাকায় ঝামেলা লাগে। মানুষ আতঙ্কে থাকতে হয়।
বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, ‘এলাকায় নির্বিবাদে চলছে জমি লুঠ। প্রশাসন সব কিছু জেনেও স্পিকটি নট। এবারে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে মানুষের কাছে তুলে ধরব সরকারি খাস জমি চুরি।’ খাস জমি চুরি করে বেচে দেওয়াকে নির্বাচনি ইস্যু করতে চাইছে সিপিএমও। দলের জেলা সম্পাদক আনাহারুল হক বলেন, ‘জমি নিয়ে সীমাহীন দুর্নীতি করেছে তৃণমূল।’ অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন কমলাবাড়ি ২ নম্বর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সভানেত্রী সোনা টপ্নো। তিনি বলেন, ‘এলাকায় প্রভাবশালীদের দাপট রয়েছে। সরকারি জমি দখল করে কেউ কারখানা তৈরি করে ফেলেছে। কেউ করছে মাছের ব্যবসা করছে।’