আলিপুরদুয়ার: পালকি অ্যাম্বুল্যান্স, আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের একটি উদ্যোগ যা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চর্চা হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন পুরস্কারও পেয়েছে জেলা প্রসাশন এই প্রকল্পে। মূলত জেলার বক্সা পাহাড়ের বাসিন্দাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই এই অ্যাম্বুল্যান্স চালু করা হয়েছিল। পালকির মাধ্যেমে যেন সহজে কোনও রোগীকে পাহাড় থেকে নিচে নামানো যায় বা উপরে নিয়ে যাওয়া যায় সেই উদ্দেশ্যেই এটা চালু হয়েছিল। এবার সেই অ্যাম্বুল্যান্সকে আরও নতুন রূপ দেওয়া হয়েছে। কাঠের পালকি অ্যাম্বুলেন্সের বদলে বেতের পালকি অ্যাম্বুল্যান্স চালু করা হবে বক্সায়।
জেলার কালচিনি ব্লকের বক্সা পাহাড়ের সুবিধার জন্য এই নতুন পরিষেবা শুরু হবে। এবিষয়ে কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মন বলেন, ‘পালকি অ্যাম্বুল্যান্স বক্সা পাহাড়ের জন্য একটি খুব ভালো প্রকল্প। সেটাকে বেতের করা হয়েছে। এতে অ্যাম্বুল্যান্স আরও সহজে নিয়ে যেতে পারবে বক্সার বাসিন্দারা।’ এই কাঠের পালকির বদলে বেতের পালকি শুরু করার পেছনে মূল কারণ সেটার ওজন কমানো। বক্সা পাহাড়ে বর্তমানে দুটো পালকি অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া রয়েছে।একটি থাকে বক্সা ফোর্টে এবং আরেকটি লেপচাখায়। এই একটি পালকির ওজন প্রায় ১০০ কেজি। এত ভারী পালকি নিয়ে সমস্যায় পড়ছিল বক্সা পাহাড়ের বাসিন্দারা। এই ভারের জন্য পালকি অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। বিষয়টি নজরে আসার পর সেটার ওজন কমানোর ভবানায় ছিল জেলা প্রশাসন। শেষে কাঠের বদলে বেতের অ্যাম্বুল্যান্স চালুর পরিকল্পনা করা হয়।
ইতিমধ্যেই একটি বেতের পালকি তৈরিও হয়ে গিয়েছে। আলিপুরদুয়ারের হস্তশিল্পী বিপুল বিশ্বাস পাঁচ ফুট লম্বা এবং আড়াই ফুট চওড়া এই বেতের পালকি তৈরি করেছেন। বিপুল জানালেন, পালকির ওজন যতটা কম রাখা যায় উনি সেই চেষ্টা করেছেন। যেখানে কাঠের পালকির ওজন ছিল প্রায় ১০০ কেজি, সেখানে বেতের পালকির ওজন কমে হয়েছে প্রায় ৪০ কেজির মতো।
ওজন কমায় পাহাড়ের বাসিন্দারা সহজে এটা ব্যবহার করতে পারবে বলে মত পাহাড়ে স্বাস্থ্যর বিষয়টি নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। ওই সংগঠনের কালচিনির জেনারেল ম্যানেজার তুষার চক্রবর্তীর কথায়, ‘পালকির ওজন বেশি হওয়াও সেটা ব্যবহার করতে সমস্যা হচ্ছিল বক্সার লোকেদের। এজন্য বিকল্প পালকি তৈরি করা হয়েছে। বেতের পালকির উপর প্যারাসুট কাপড় দেওয়া হয়েছে। আর কাঠের পরিবর্তে স্টিলের হাতল দেওয়া হয়েছে।’
নতুন পালকি তৈরি হয়ে গিয়েছে, এবার সেটা জেলা প্রশাসনের মাধ্যেমে উদ্বোধনের অপেক্ষায়। আর এরপরই বক্সার বাসিন্দারা নতুন পালকি অ্যাম্বুল্যান্স পাবে। এই খবরে খুশি বক্সার বাসিন্দারাও। এবিষয়ে সদর বাজারের বাসিন্দা অঞ্জনা থাপার বক্তব্য, ‘যে পালকি অ্যাম্বুল্যান্স আছে সেটার এত ওজন যে ওটা তুলতে আটজন লোক লাগে। প্রয়োজন পড়লে তাই স্টেচারই ব্যবহার করে পাহাড়ের সবাই। এবার যদি কম ওজনের পালকি দেওয়া হয় তাহলে তো ভালোই হয়।’ তবে আগে যেভাবে পালকি নিয়ে প্রচার করেও পাহাড়ে সেটার সফলতা দেখা যায়নি নতুন পালকি এবার বাস্তবে কতটা কাজে আসে সেটাও দেখার আছে বলে মত বক্সার অনেকেরই।