প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লিঃ দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল জল্পনা। অবশেষে বন্দে ভারত সহ দেশের সমস্ত এগজিকিউটিভ ক্লাসের ট্রেনের ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত নিল রেল। এদিন অশ্বিনী বৈষ্ণবের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রক সূত্রে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়, ‘বন্দে ভারত’-সহ দেশের সমস্ত এগজিকিউটিভ এবং প্রিমিয়াম ক্লাস ট্রেন সহ বিলাসবহুল ভিস্তা ডোম এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কার ট্রেনগুলির সর্বোচ্চ ভাড়া ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। সংশ্লিষ্ট ট্রেনগুলির কত টিকিট বিক্রি হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করেই এই ভাড়া কমানো হবে।
শনিবার রেল মন্ত্রক এও জানিয়েছে, গত এক মাসে যে সমস্ত ট্রেনগুলির মোট আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি টিকিট বিক্রি হয়নি, সেই ট্রেনগুলিতে নতুন ভাড়া অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে রিজার্ভেশন চার্জ, জিএসটি সহ অন্য পরিষেবা মূল্য এক্ষেত্রে আলাদা করে নেওয়া হবে। যারা ইতিমধ্যে ট্রেনে টিকিট বুক করে নিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় বা রিফান্ড করা হবে না, দাবি রেলের সূত্রে। ছুটি বা উৎসবের মরশুমে চালু করা স্পেশাল ট্রেনের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কিন্তু প্রযোজ্য নয়। এই স্কিমের মেয়াদ আপাতত একবছর রাখা হয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই রেলের এই ঘোষণায় অনেকটা স্বস্তি পেয়েছেন রেলযাত্রীরা। প্রশ্ন উঠেছে হঠাৎই ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত কেন রেলের? দীর্ঘদিন ধরে রেলের ভাড়া কমায়নি রেল৷ এমনকি বয়স্ক বা সিনিয়র সিটিজেনদের ভাড়াতেও আনা হয়নি হ্রাস। এদিকে একের পর এক, নিত্য নতুন ট্রেন চালালেও, ভাড়া ছিল আকাশছোঁয়া। এরই মধ্যে চালু হয়েছে ‘বন্দেভারত এক্সপ্রেসও। ভারতীয় রেলে যে সমস্ত ট্রেন রয়েছে, তার ম সবথেকে বেশি জনপ্রিয় হল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। উদ্বোধনের পর থেকেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে এই ট্রেন। মোটামুটি ১২০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা থাকে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ভাড়া। এর ফলে অনেকের ইচ্ছা থাকলেও, বন্দে ভারতে চড়তে পারেন না কেবলমাত্র ভাড়ার কারণে। এ নিয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বন্দে ভারতের ভাড়া কমাতে রেল মন্ত্রকের কাছে আর্জি দিয়েছিলেন, তবে তাতে কর্ণপাত করেনি রেল মন্ত্রক। এবার সকল যাত্রীদের জন্য সুখবর শোনাল ভারতীয় রেলওয়ে, ঘোষণা করা হল বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত।
রেল সূত্রে খবর, ইন্দোর-ভোপাল, ভোপাল-জবলপুর, নাগপুর-বিলাসপুর বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনগুলির ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ এই এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিতে যাত্রীর সংখ্যা অত্যন্ত কম। রেল মন্ত্রকের দাবি, ভোপাল-জবলপুর বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে মাত্র ২৯ শতাংশ আসন পূরণ হয়। ইন্দোর-ভোপাল বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে যাত্রী হার মাত্র ২১ শতাংশ। এই ট্রেনগুলির এসি চেয়ারকারের ভাড়া ৯৫০ টাকা এবং এগজিকিউটিভ চেয়ারকারের টিকিটের দাম ১৫২৫ টাকা। একইভাবে নাগপুর-বিলাসপুর বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে গড়ে ৫৫ শতাংশ আসন পূর্ণ হয়। রেল মন্ত্রকের ধারণা, স্বল্প দূরত্বের এই ট্রেনগুলির যদি ভাড়া কমানো হয়, তবে যাত্রী সংখ্যা অনেকটাই বাড়তে পারে। যাতে আরও বেশি সংখ্যক যাত্রীরা এই ট্রেনে চড়তে পারেন, তার জন্যই এই সমস্ত ট্রেনের ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।