পতিরামঃ আবহাওয়ার হঠাৎ করে পরিবর্তন। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে রেমাল নামে যে ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হচ্ছে তার প্রভাবে দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদা জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে মাঝিয়ান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরকে উদ্ধৃত করে মাঝিয়ান থেকে শুক্রবার জানানো হয়, হঠাৎ করে আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দুটি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এমন প্রতিকূল আবহাওয়ায় দুই জেলার মানুষকে সতর্ক থাকার বিশেষ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার মাঝিয়ান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রেরিত বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, আগামী ২৫ ও ২৬ মে মালদা ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বৃষ্টিপাত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। এই সময় আদ্রতা জনিত অস্বস্তি বিরাজ করবে। কিন্তু নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদা জেলায় আগামী ২৭, ২৮ ও ২৯ মে এই তিনদিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতি জেলায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে রাস্তাঘাট, মাঠের জমি সহ বিভিন্ন জায়গা জলমগ্ন হতে পারে। বৃষ্টিপাতের সময় বজ্রপাতেরও আশঙ্কা থাকায় মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৯ মে পর্যন্ত দুটি জেলায় দিনের তাপমাত্রা থাকতে পারে সর্বোচ্চ ৩৪-৩৬ এবং সর্বনিম্ন ২৩-২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। আগামী পাঁচদিনে বাতাসে আপেক্ষিক আদ্রতার পরিমাণ দাঁড়াতে পারে সর্বোচ্চ ৪৬-৮৫ ও সর্বনিম্ন ২৩-৫০ শতাংশের মতো। তবে প্রবল বৃষ্টি হলেও ঝড় হওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই।
মাঝিয়ান কৃষি কলেজের ডিন ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের নোডাল অফিসার ডঃ জ্যোতির্ময় কারফর্মা বলেন, তিনদিনে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির ফলে মাঠের বিভিন্ন ফসলের জমি ও রাস্তাঘাট জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। তাই বিশেষ করে দানাশস্য জাতীয় ফসল ভুট্টা, ধান ইত্যাদির জমি থেকে বৃষ্টির জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে রাখতে হবে। চাষি ভাইদের আবেদন জানানো হয়েছে, জমিতে বোরো ধান ৮০ শতাংশের মতো পেকে গেলে যত দ্রুত সম্ভব তা কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মাঝিয়ানের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক সুমন সূত্রধর আবহাওয়ার বিশেষ খবর প্রসঙ্গে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা থাকলেও ঝড় হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই। এই সময় ২৫ ও ২৬ মে পূর্ব দিক থেকে এবং ২৭ থেকে ২৯ মে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রতি ঘন্টায় ৭-২৫ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। বাতাসে আপেক্ষিক আদ্রতার পরিমাণ দাঁড়াতে পারে সর্বোচ্চ ৪৬-৮৫ এবং সর্বনিম্ন ২৩-৫০ শতাংশের মতো। যেহেতু বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে তাই এই সময়ে মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার বিশেষভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
