উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকা অতিক্রম করেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল। শক্তি হারিয়ে ধীরে ধীরে এটি দুর্বল হচ্ছে। এরপর এটি নিম্নচাপে পরিণত হবে। ঘূর্ণিঝড়টির পুরো প্রভাব শেষ হতে বেলা গড়িয়ে যাবে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি রবিবার স্থানীয় সময় রাত আটটার দিকে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে। এরপর উপকূল থেকে শুরু করে সারা দেশে বৃষ্টি শুরু হয়।
সোমবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্র বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করেছে। তিনি বলেন, এটি এখন খুলনা ও কয়রার দিকে আছে। এখনও এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় অবস্থায় আছে। তবে দুই ঘণ্টার মধ্যেই এটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এরপর এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে।
রবিবার রাত আটটার দিকে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়।
রবিবার রাত থেকে এপার-ওপার দুই বাংলাতেই তাণ্ডব দেখিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলোচ্ছ্বাস। ফলে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকেছে জোয়ারের জল। এছাড়া ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়ছে কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালা। গতকাল রবিবার থেকে আজ সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত বাংলাদেশের পটুয়াখালী, ভোলা, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম বরিশালে অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড এলাকায় প্রচণ্ড বাতাসে ঘর ভেঙে দেয়ালচাপায় মনেজা খাতুন (৫৪) নামের এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে গাছ চাপা পড়ে গিয়ে ৬৫ বছর বয়সী শওকত মোড়লের মৃত্যু হয়েছে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় চরে আটকে পড়া নিজের ফুফু ও বোনকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনতে তাদের বাড়িতে যাচ্ছিলেন শরীফ হাওলাদার (২৫) নামের এক যুবক। রবিবার দুপুরে তিনি বাড়ি ফেরার পথে ডুবে মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা ধূলাসর ইউনিয়নের কাউয়ারচর এলাকায়।
রবিবার রাতে ঘূর্ণিঝড় রেমালের ঝড়-বৃষ্টিতে বরিশালের রুপাতলী এলাকায় একটি বিল্ডিংয়ের দেয়াল ধসে পাশেই থাকা একটি খাবারের হোটেলের টিনের ওপর পড়ে। সেখানে চাপা পড়ে দুইজন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতরা হলেন, হোটেলের মালিক লোকমান ও কর্মী মোকসেদুর রহমান।
এদিকে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ থানাধীন টেক্সটাইল জেড আবাসিক এলাকায় নির্মীয়মান ভবনের দেয়াল ধসে সাইফুল ইসলাম হৃদয় (২৬) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।