উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ রেমাল ঘূর্ণিঝড় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে বাংলাদেশে। ঝড়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী জেলাগুলোকে। এসব জেলার কাছের দ্বীপ ও চরগুলোতে জারি করা হয়েছিল চরম সতর্কতা। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুরের কাছের দ্বীপ ও চরগুলোও এই আওতায় ছিল।
রেমালের প্রভাবে বাংলাদেশের ঝড় বিধ্বস্ত বিস্তির্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বরগুনার প্রধান তিন নদীতে জোয়ারের জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে বরগুনার আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড পশরবুনিয়া গ্রামে প্রায় ৬০০ মিটার বাধ ভেঙে সেই জল পায়রা নদীতে গিয়ে মিশেছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের অধীন চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বরগুনা উন্নয়ন বোর্ডের আধিকারিক মো. রাকিব বলেন, ‘অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে আমতলীর পরশুরবুনিয়া এলাকার বাঁধ ভেঙে নদীতে বিলীন হয়েছে। আমরা বাঁধের ভাঙা অংশ মেরামতের কাজ শুরু করেছি। এ ছাড়া যেসব বাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলো দ্রুত মেরামত করা হবে। জেলার এক হাজার মিটার বাধ ঝুঁকিতে রয়েছে।’
কক্সবাজারে পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরাটেক, কুতুবদিয়াপাড়া, সমিতিপাড়া, ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর নুনিয়াছটাসহ অন্তত ২১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে জোয়ারের জলে। শহরের কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাবলিক হল ও কিছু হোটেলগুলোকে ত্রাণশিবির হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কক্সবাজার পুরসভার নাজিরারটেক উপকূলে শুঁটকি উৎপাদনের মহাল রয়েছে প্রায় ৭০০টি। জোয়ারের জলে ৩০০টির বেশি মহাল বর্তমানে জলের তলায়।
প্লাবইত হয়েছে বরিশালের রূপতলীর জিয়ানগর, খ্রিষ্টানপাড়া, পলাশপুর, বেলতলা, মোহাম্মদপুর, রসুলপুর, দক্ষিণ রূপাতলী, ভাটিখানা, কাউনিয়া, প্যারারা রোড, সদর রোড, কেডিসি, ত্রিশ গোডাউন, দপদপিয়া ও কালিজিরা এলাকার নিম্নাঞ্চল। এই এলাকাগুলিতে জলবন্দি হাজার হাজার মানুষ। এসব এলাকার গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সড়কের ওপর দিয়ে জল বইছে। ফলে বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা।
বাংলাদেশের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ৯ হাজার ২২২টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। সেই শিবিরে এ পর্যন্ত আট লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় উপকূলের কোথাও কোথাও প্রাথমিকভাবে ৬ থেকে ৭ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছে।