ময়নাগুড়ি: যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হোক, এই আশা নিয়েই এবার ভোট দেবেন ময়নাগুড়ি ব্লকের শেষ প্রান্তে অবস্থিত চ্যাংমারি বনবস্তির বাসিন্দারা। ওই বনবস্তির তিন প্রান্তজুড়ে রয়েছে রামশাই ও গরুমারার বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল। জঙ্গলের ভেতর দিয়ে এক কিমি দীর্ঘ রাস্তা। এই রাস্তাটিই স্থানীয়দের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। যদিও বিকেলের পর ওই রাস্তায় চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আর সেই সময় গ্রামে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় চা বাগান ঘেষা একটি কাঁচা রাস্তা। তাই আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে এলাকার যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত করার দাবি জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যদিও স্থানীয় রামশাই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বিশ্বজিৎ ওরাওঁয়ের আশ্বাস, ‘বনবস্তিবাসীর দীর্ঘদিনের সমস্যা ছিল আলো, রাস্তাঘাট, পানীয় জলের। সেই সমস্যাগুলোর সমাধান অনেকটাই করা হয়েছ, আগামীতেও বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা হবে।’
দীর্ঘ কয়েক বছর ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যাহত থাকে। দীর্ঘসময় অপেক্ষার পর সেখানে পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। পানীয় জলের সমস্যাও এক সময় প্রকট আকার ধারণ করেছিল। তবে জলের রিজার্ভার বসানো হলে পানীয় জলের সমস্যা থেকেও স্থানীয়রা অনেকটাই মুক্তি পান। প্রমীলা ওরাওঁ নামে এক স্থানীয় বৃদ্ধার দাবি, ‘কয়েকদশক ধরে ভোট দিচ্ছি, এবারও দেব। তবে দাবি একটাই, এলাকায় রাস্তাঘাট তথা যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা হোক।’
জঙ্গল ঘেঁষা ওই এলাকায় বন্যপ্রাণীর উৎপাত লেগেই থাকে। সন্ধ্যা হতেই এলাকায় হিংস্র জন্তুর ঢুকে যাওয়া যেন নিত্যদিনের ঘটনা। আরেক বাসিন্দা রাধা ওরাওঁ বলেন, ‘দিনভর নির্বিঘ্নে কাটলেও সন্ধের পর থেকেই বন্যপ্রাণীর সঙ্গে আমাদের একপ্রকার সহাবস্থান করতে হয়। তবে সব থেকে বড় সমস্যা যাতায়াত ব্যবস্থার। গাড়ি করে যাতায়াতের জন্য জঙ্গলের রাস্তাটিই একমাত্র ভরসা। কারণ চা বাগানের কাঁচা রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচলে ভীষণ সমস্যা হয়। ওই রাস্তাটি পাকা করা হলে খুব সুবিধা হয়।’
একটা সময় ওই বনবস্তি বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ছিল। বিদ্যুতের সমস্যা, পানীয় জলের সমস্যা ছিল নিত্যসঙ্গী। ইতিমধ্যে বেশকিছু সমস্যার সমাধানও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু যোগাযোগের ব্যবস্থার উন্নয়ন আজও হয়নি। লোকসভা ভোটের আগে তাই স্থানীয়রা যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত করার দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় তরুণ জীতবাহন ওরাওঁ জানান, বনবস্তিতে আলোর সমস্যা ও পানীয় জলের সমস্যা ছিল, তবে নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার পাশাপাশি পানীয় জলের একটি রিজার্ভার বসানো হয়েছে। যার ফলে অনেকটাই সুবিধা হয়েছে। তবে এখন প্রধান সমস্যা যোগাযোগ ব্যবস্থার। তাঁর দাবি, ‘আগামীতে এলাকায় নতুন রাস্তাঘাট হবে এই আশা নিয়েই ভোট দিতে যাবেন বনবস্তিবাসী।’