ধূপগুড়ি: মাকে বাইকে বসিয়ে নিয়ে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল ছেলে। কিন্তু বেহাল রাস্তায় বাড়ি ফেরার আগেই কেড়ে নিল মায়ের প্রাণ। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে ধূপগুড়ির রেলওয়ে ওভারব্রিজ এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শী দিবাকর দাস বলেন, বাইকে করে ছেলেটি তাঁর মাকে নিয়ে কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ির দিকে যাচ্ছিল। এশিয়ান হাইওয়ের গর্তে বাইকে চাকা পড়তেই ঝাকুনিতে মহিলা পড়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় মহিলাকে স্থানীয়রাই উদ্ধার করে ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মহিলাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। মাকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ছেলে।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, ওভারব্রিজের ভাঙা সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বারবার রেল ও এশিয়ান হাইওয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। উলটো রেল এবং এশিয়ান হাইওয়ে একে অপরের ওপর দোষারোপ করেই দায় এড়িয়ে নিয়েছে। দু’পক্ষের টানাপোড়েনে চাপের মুখে পড়েছে পুলিশ। ট্রাফিক গার্ড ও পুলিশের যুক্তি, রাস্তা ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটলে দায় পড়ছে পুলিশের ঘাড়ে। কিন্তু বেহাল সড়ক কেউই ঠিক করতে এগিয়ে আসেনা। বাধ্য হয়ে অপর কোনও রাস্তার কাজ চলা ঠিকাদারকে দিয়ে সংস্কার করাতে হয়।
প্রসঙ্গত, ওভারব্রিজের রাস্তা চালুর প্রায় একবছর পর থেকেই বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। এবারে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ রাস্তা এশিয়ান হাইওয়ের কাছে হস্তান্তর করার আগেই বর্ষায় রাস্তা আরও বেহাল হয়ে পড়েছিল। সেকারণে এশিয়ান হাইওয়ে কর্তৃপক্ষ বেহাল অবস্থায় হস্তান্তর নিতে নারাজ। এদিকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও বারবার হস্তান্তর করতে চাইছে। এই অবস্থায় কে ওই অংশের দায়িত্ব নেবে তা নিয়েও সন্দিহান পুলিশ এবং ট্রাফিক গার্ড নিজেও। কিন্তু সড়কে গর্তের কারণে বারবার দুর্ঘটনা ঘটায় চাপের মুখে পুলিশ এবং ট্রাফিক গার্ড।
জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের ট্রাফিকের ডেপুটি পুলিশ সুপার অরিন্দম পাল চৌধুরী নিজেও এশিয়ান হাইওয়ে, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে রাস্তা মেরামতের কাজ করার বলেছিল। এতে কেউ ভ্রুক্ষেপ করছে আবার কেউ দায়িত্বে থাকলেও দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। তারপরও দেখা যায় এশিয়ান হাইওয়ে নির্মাণের বরাতপ্রাপ্ত সংস্থাকে দিয়ে রাস্তা সংস্কার করাচ্ছে এবং পুলিশ নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মেরামতের কাজ করাচ্ছে। কিন্তু সংস্কার করলেও অল্পদিনের মধ্যেই পুনরায় বেহাল হয়ে পড়ছে এবং দুর্ঘটনা নিয়মিতই ঘটে যাচ্ছে।