পল্লব ঘোষ, আলিপুরদুয়ার: দিন-দিন পারদ চড়ছেই। এই গরমে ভরসা ফ্রিজের জল, ফ্যান, এসি। শুধু তাই নয়। ঝোঁক বাড়ছে শীতলপাটির দিকেও। শহরের বাজারে এখন তাই বিক্রি বাড়ছে এই শীতলপাটির। এর ব্যবহার সারাবছর দেখা না গেলেও তীব্র গরমে এই মাদুরের জুড়ি মেলা ভার। দশকর্মা দোকান ও হাটখোলা এলাকার বাজারে সারি সারি শীতলপাটি সাজিয়ে রাখতে দেখা যায়। শহর থেকে শুরু করে শহরতলির অনেকেই আসেন শীতলপাটি কিনতে। গ্রামবাংলার প্রাচীন এই মাদুরের কদর এখন আরও বেড়ে গিয়েছে অসহ্যকর তাপপ্রবাহের কারণে।
জীবন সরকার প্রতিবার গরমে একটি করে শীতলপাটি(Shital Pati) কিনে নিয়ে যান। এতে রোগব্যাধির সম্ভাবনাও নাকি কমে। ব্যবসায়ী বিকাশ বিশ্বাসের কথায়, ‘সারাবছর বিয়েবাড়ি এবং অন্য অনুষ্ঠানের জন্য টুকিটাকি শীতলপাটি বিক্রি হলেও গরমে সবচেয়ে বেশি বাড়ে শীতলপাটির চাহিদা। কয়েক বছর আগের তুলনায় ব্যবহার কমলেও একেবারে মুছে যায়নি শীতলপাটির ব্যবহার।’ শীতলপাটির দাম কেমন? উত্তরে বিকাশ জানালেন, ৫ বাই ৭ ফুট মাপের শীতলপাটি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং ৬ বাই ৭ ফুট মাপের শীতলপাটি ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কোচবিহারের(Cooch Behar) ঘুঘুমারি থেকে এই শীতলপাটি কিনে নিয়ে আসা হয় শহরে বিক্রির জন্য। এদিন বাজারে গিয়ে দেখা গেল, কুন্তল বর্মন বাড়িতে ব্যবহার করার জন্য দুটো শীতলপাটি কিনে নিয়ে যান। বললেন, ‘কিছুক্ষণের আরামের জন্য এসি বা ফ্যান ঠিক আছে। অনেকেরই ফ্যান, এসির হাওয়ায় শরীর ব্যথা করে। দুর্বল লাগে। গরমের দিনে শীতলপাটির ব্যবহার শরীরকে আরাম তো দেয়ই, সঙ্গে এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।’
কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকায় এই শীতলপাটি বানানো হয়। কখনও নকশা করা হয়, কখনও আবার খুব সাধারণ ডিজাইন রাখা হয়। মূলত শরীর ঠান্ডা রাখে এই মাদুর, তাই গরমে এর ব্যবহার বাড়ছে। শুধু তাই নয়, অনেকে শীতলপাটি ও পাখা কেনেন ঘরবাড়ি সাজানোর জন্য।
ব্যবসায়ী দীনবন্ধু সাহার কথায়, ‘সাধারণত বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও গরমকালে ব্যবহারের জন্যই শীতলপাটির চাহিদা বাড়ে। সারাবছর টুকটাক শীতলপাটি বিক্রি হলেও মূলত গরমকালেই এই মাদুরের বিক্রি অনেকটা বেশি হয়। গরমকালে দিনে গড়ে তিন থেকে চারটি বা কখনও তারও বেশি শীতলপাটি বিক্রি করি। গরমে এই মাদুর বিক্রি করে কিছুটা বাড়তি আয় হয়। ব্যবসাও ভালো জমে।’