জ্যোতি সরকার, জলপাইগুড়ি: গয়েরকাটা থেকে ধূপগুড়ি যে রাস্তাটা চলে গিয়েছে, তার ডানদিকে পড়ে একটা মাঠ। মাঠ লাগোয়া সেই বাড়িতে থাকতেন কিংবদন্তি লেখক সমরেশ মজুমদার। সেখানেই তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা। সেই বাড়িতে বিশিষ্ট লেখকের নামে গবেষণাকেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হল। এ জন্য গয়েরকাটার সব স্তরের বাসিন্দারা গয়েরকাটা চা বাগান কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন। লক্ষ্য হল দু’হাজার মানুষের গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা। ইতিমধ্যেই গণস্বাক্ষর সংগ্রহের অভিযানে নেমেছেন সমরেশ মেমোরিয়াল সোসাইটির সদস্য কানাই চট্টোপাধ্যায়, কৃষ্ণ দাস, জয়দীপ তলাপাত্রের নেতৃত্বে এলাকার মানুষ।
সোসাইটির সচিব সমরেশ মজুমদারের কন্যা দোয়েল মজুমদার জানিয়েছেন, তাদের সংস্থা ‘স্মরণে সমরেশ’ স্মারক পুরস্কার দেবে। এবার এই পুরস্কার পাচ্ছেন কিংবদন্তি লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। কলকাতা বইমেলায় ২৬ জানুয়ারি পুরস্কার দেওয়ার কথা। শীর্ষেন্দুর হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন অন্য কিংবদন্তি লেখক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। দোয়েলের কাছে জানা গেল, উত্তরবঙ্গের সেরা প্রতিশ্রুতিবান লেখককেও পুরস্কার দেওয়া হবে।
গয়েরকাটার স্টাফ কোয়ার্টারে যেখানে সমরেশের জন্ম, সেখানে কী করার পরিকল্পনা? এই কোয়ার্টারে বর্তমানে থাকেন জয়দীপ ও তাঁর পরিবার। জয়দীপ বাড়িটিকে সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করে রেখেছেন। সমরেশের স্মরণে মাঠে গাছও লাগানোর প্রধান উদ্যোগ তাঁর।
জয়দীপ পরের মাসে অবসর নেবেন। তিনি চান, সমরেশ মজুমদার গবেষণাকেন্দ্র তৈরি হোক দ্রুত। তাঁর মনে হয়, এতে গয়েরকাটাবাসীর আশা এবং আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে। সমরেশ-কন্যা এবং লেখকের শুভানুধ্যায়ীদের স্বপ্ন, এই গবেষণাকেন্দ্রে লেখকের সব বই যেমন থাকবে, তেমন এখানে সেমিনার হবে বিভিন্ন বিষয়ে। সাহিত্যচর্চার এক কেন্দ্র হয়ে উঠবে এই বাড়ি।
গয়েরকাটা চা বাগান কর্তাদের কাছে এই গণস্বাক্ষরের চিঠি যেমন যাচ্ছে, তা যাচ্ছে এডিটর্স গিল্ডের কাছেও, যাতে এই আবেদনপত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে পৌঁছায়। গয়েরকাটা থেকে সমরেশ মেমোরিয়াল সোসাইটির সদস্য কৃষ্ণ দাস বললেন, ‘গণস্বাক্ষর অভিযানে বিপুল সাড়া পাওয়া গিয়েছে। গয়েরকাটার সর্বস্তরের মানুষ চান তাঁর জন্মভিটেতেই হোক সমরেশ মজুমদার গবেষণাকেন্দ্র।’ তাঁকে সমর্থন করেন গয়েরকাটার অন্যতম সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অন্তু চট্টোপাধ্যায়। এখন অপেক্ষা, গবেষণাকেন্দ্র শেষপর্যন্ত কবে হয়।