উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা ভোটের (Loksabha election) আগে বড় চাপে পড়ে গেল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool)। সন্দেশখালিকাণ্ডে (Sandeshkhali case) সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta high court)। এমনকি আজই বিকেল সাড়ে চারটের মধ্যে শেখ শাহজাহানকে (Sheikh Shahjahan) সিবিআইকে হস্তান্তর করতে হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। একই সঙ্গে ইডির (ED) উপর হামলার ঘটনায় হাইকোর্ট যে সিট গঠন করা হয়েছিল তাও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এই মামলারও তদন্ত করবে সিবিআই।
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি করতে যান ইডি আধিকারিকরা। অভিযোগ, সেই সময় শাহজাহানের অঙ্গুলিহেলনে ইডি আধিকারিকদের উপর হামলা চালায় শাহজাহানের অনুগামীরা। গুরুতর জখম হন এক ইডি আধিকারিক। কার্যত এলাকা থেকে পালিয়ে যেতে হয় তাঁদের। তারপর থেকে গা ঢাকা দিয়েছিল শাহজাহান। তাঁকে ধরতে পারেনি পুলিশ। এরপরই ধীরে ধীরে সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে থাকেন এলাকার মহিলারা। প্রকাশ্যে আসে বিস্ফোরক অভিযোগ। সুন্দরী মহিলাদের গভীর রাতে পার্টি অফিসে ডেকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে সরব হন মহিলারা। এছাড়াও জমি দখল, মারধর, খুনের চেষ্টা সহ নানা অভিযোগ সামনে আসে।
কার্যত ২ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সন্দেশখালিজুড়ে বিক্ষোভ চলতে থাকে। কিন্তু পুলিশ শাহজাহান শেখকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি। যদিও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আদালত স্থগিতাদেশ দেওয়াতেই শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। যদিও কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ স্পষ্ট করে দেয় শাহজাহানকে গ্রেপ্তারে কোনও স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি।পুলিশ, সিবিআই, ইডি যে কেউ শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। এরপরই তৎপর হয়ে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ৫৫ দিন পর বসিরহাটের মিনাখাঁ থেকে শাহজাহান শেখকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপর সিআইডির হাতে যায় গোটা মামলা। কয়েক দফায় জেরাও করা হয় শেখ শাহজাহানকে।
এদিন শুনানিতে ইডি-র তরফে সওয়াল করা হয়, তদন্তে স্থগিতাদেশ থাকলে কীভাবে শাহজাহানকে পুলিশি হেপাজতে নেওয়া হল? কেন জেল হেপাজতে পাঠানো হল না? ইডি-র যুক্তি ছিল, ১৫ দিন পরে চাইলেও তাঁকে হেপাজতে নিতে পারবে না সিবিআই। শুধু সময় নষ্ট হবে। শাহজাহানের আইনজীবীও বলেন, ‘যদি তদন্তে স্থগিতাদেশ থাকে তা হলে আমার মক্কেলকে কেন হেপাজতে রাখা হবে?’ আর সিবিআইয়ের দাবি, তারা শাহজাহানকে নিজেদের হেপাজতে নিতে চায়। তদন্তও তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানায় এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। শেষ পর্যন্ত সিবিআইয়ের দাবি মেনে গোটা তদন্তের দায়িত্ব তাদেরকেই দিয়েছে আদালত।