বালুরঘাট: বর্জ্য রিসাইক্লিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করে তাক লাগালো বালুরঘাটের গ্রামীণ এলাকার দুই পড়ুয়া। যা আগামীতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পুনর্নবীকরণ ক্ষেত্রে পথ দেখাবে বলে আশাবাদী সকলে। স্কুলে কর্মশিক্ষা পরীক্ষায় তারা মাটির মূর্তি তৈরি করেছিল। তখনই স্কুলের শিক্ষকরা তাকে এমন অভিনব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা বলেন। তারপরেই এই সফলতা পেয়েছে স্কুল পড়ুয়া রাজকুমার ও দেব।
বালুরঘাট শহরের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত অযোধ্যা গ্রাম। সেখানকার কালিদাসী বিদ্যানিকেতনের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র রাজকুমার লোহার ও সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র দেব লোহার। মূলত প্রথম প্রজন্মের ও আদিবাসী শিক্ষার্থীরাই এই বিদ্যালয়ের পড়ুয়া। তবে শিক্ষকদের অনুপ্রেরনায় উদ্ভাবনী ও সৃজনশীলতার পরিচয় দিচ্ছে স্কুলের পড়ুয়ারা। দৈনন্দিন জীবনে আমরা প্রচুর জিনিস ব্যবহারের পরে ফেলে দিই। প্রচলিত ভাষায় যাদের আবর্জনা বলে থাকি। কিন্তু সেগুলি দিয়েই আবার নতুনভাবে কিছু তৈরি করা যায়, তারই প্রমাণ দিল এই দুই পড়ুয়া। দুজনই নিজের দক্ষতায় দুটি সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করেছে। কারো প্রতিমায় ফেলে দেওয়া পুতুলের মাথা ব্যবহার করা হয়েছ। কেউ আবার কার্যত বাড়ির বর্জ হিসেবে দেখা ব্যবহার করা কৌটোর খাপ দিয়ে প্রতিমা সজ্জা করেছে। প্রতিমায় ব্যবহার করা হয়েছে প্লাস্টিকের বোতলও। স্কুলের তরফে সরস্বতী পুজোর দিন মূল প্রতিমার পাশে এই দুই খুদের অপটু হাতে বানানো সরস্বতী প্রতিমা দুটি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
খুদে শিল্পী রাজকুমার লোহার বলেন, ‘কর্মশিক্ষা পরীক্ষায় প্রতিমা তৈরি করেছিলাম। তখনই শিক্ষকরা প্রশংসা করেছিলেন ও এমন শিল্প তৈরীর জন্য উপদেশ দেন। তারপরেই এটার জন্য পড়েছিলাম। সকলের ভাল লেগেছে শুনেই আনন্দ হচ্ছে।’ আরেক শিল্পী দেব লোহারের মতে, ‘ এসব জিনিস ব্যবহার করে ফেলে দিই। কিন্তু সেগুলো দিয়ে যে শিল্পকর্ম সৃষ্টি হতে পারে।তার শিক্ষকদের পরামর্শ না পেলে বুঝতে পারতাম না।’
স্কুলের শিক্ষক তুহিনশুভ্র মন্ডল জানান, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সচেতনতার বার্তা দিতে ও রিসাইকেল করার কথা জানাতেই তাদের এমন উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেছিলাম। তারা প্লাস্টিকের বোতলের অংশ, পুতুলের মুখ, রংয়ের কৌটোর ছোট ঢাকনি, প্লাস্টিক,কাগজ ইত্যাদি দিয়ে সুন্দর সরস্বতী প্রতিমা গড়েছে। ওদের সৃজনধর্মী প্রতিভা আরও বিকশিত হোক। ওদের দেখে আশা করি অনেক পড়ুয়া এই বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠবে।’