হরিরামপুরঃ নিজের দোনলা বন্দুক থেকে বুকে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক প্রবীন সিপিএম নেতা। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর ব্লকের পুন্ডরী পঞ্চায়েতের সোনাহান গ্রামে। মৃত ব্যাক্তির নাম শামসুজ্জামান (৭২)। তিনি বাম আমলে হরিরামপুর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ছিলেন। ঘটনাটি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায় গোটা এলাকায়। এই বয়সে তিনি কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন তা নিয়ে ধোঁয়াশায় পরিবার।
মৃতের ছেলে জানাত হোসেন জানান, ‘রোজ সকালে নামাজ পড়ে বাবা প্রাতঃভ্রমণে যান। আজ সকালে বাবাকে ঘরে দেখতে না পেয়ে খুব অবাক হইনি। কিন্তু সকাল দশটার সময়ও বাবাকে বাড়ি ফিরতে না দেখে খোঁজখবর শুরু করি। বাড়িতে বাবার জুতো আছে কিনা সেটা মেয়েকে দেখতে বলি। জুতো বাড়িতেই ছিল। এরপর বাড়ির ছাদে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখি বাবা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দেহের পাশেই পড়ে রয়েছে বাবার দোনলা বন্দুক’। জানাত হোসেন বলেন, ‘আজ খুব সকালে একটা পটকা ফাটার মত শব্দ পেয়েছিলাম। একবার ভেবেছিলাম গরমে হয়তো পুরনো বাইকের টায়ার ফেটে গিয়েছে। তখন এসব কিছুই মনে হয়নি’।
তৃণমূল কংগ্রেসের জেলার নেতা তথা সোনাহান গ্রামের বাসিন্দা মোবারক হোসেন জানান, ‘শামসুজ্জামান ছিলেন সৎ এবং ধার্মিক মানুষ। ধর্মীয় নানা আচারে তার দিন কাটত’। হরিরামপুর বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৩ এই পাঁচ বছর শামসুজ্জামান হরিরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি হিসেবে সন্মানের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। সিপিআইএম দলের একনিষ্ঠ পার্টিকর্মী হিসেবে পার্টি সদস্য লাভ এমনকি ব্রাঞ্চ সম্পাদক পদের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। শামসুজ্জামান বয়স ও পারিবারিক কিছু কারণে বেশ কিছুদিন থেকেই তিনি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে দলের অনেক বড় ক্ষতি হল’।
হরিরামপুর থানার আইসি অভিষেক তালুকদার জানিয়েছেন নিজের দোনলা বন্দুক দিয়ে বুকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সোনাহান গ্রামের শামসুজ্জামান নামের এক প্রৌঢ়। আইসি জানান ঘটনাটি আজ ভোর ৪টে থেকে ৫ টার মধ্যে হয়ে থাকতে পারে। মৃতদেহটি প্রথমে হরিরামপুর হাসপাতালে ও পরে ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শামসুজ্জামানের ব্যবহারের বৈধ বন্দুকটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।