আলিপুরদুয়ার: সন্দেশখালি কাণ্ড নিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল। আর সেইসময় বুধবার সকাল সকাল আলিপুরদুয়ারজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এক চাঞ্চল্যকর পোস্টার। সন্দেশখালি কাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানকে স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে আখ্যা দিয়ে পোস্টার পড়ে কলেজ হল্ট এলাকার কংগ্রেসের পার্টি অফিসের সামনে। তাঁকে স্যালুট পর্যন্ত জানানো হয় পোস্টারে দেওয়া ‘সুশীল নাগরিকবৃন্দ’র তরফে। ফলে সেই ঘটনায় সকাল থেকেই বিশাল চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
পথচারী ও এলাকার ব্যবসায়ীদেরকে পোস্টার দেখে দাঁড়িয়ে পড়তে লক্ষ্য করা যায়। আর এই ঘটনায় জেলার রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কে বা কারা এই সুশীল নাগরিকবৃন্দ? কখন টাঙিয়ে রেখে গেল এই পোস্টার শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে? এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে শহরের অন্দরে। জানা গিয়েছে, কলেজ হল্ট এলাকার দোকানের ব্যবসায়ীরা দোকান খুলতে এসে দেখেন, সেখানে একেবারে কংগ্রেসের পার্টি অফিসের সামনে এই ধরনের পোস্টার টাঙিয়ে রাখা। সকাল সকাল এই পোস্টার দেখে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
সেখান দিয়ে যাওয়া এক পথচারী সৌভিক দেবনাথ বলেন, ‘সকালে কাজে যাওয়ার সময় দেখি এমন পোস্টার লাগানো রয়েছে। গুরুতর অপরাধে অভিযুক্তকে স্বাধীনতা সংগ্রামী আখ্যা দিয়ে পোস্টার দেওয়া হচ্ছে সেটাকে কখনও সমর্থন করা যায় না।’ এই ঘটনায় জেলার রাজনীতিতে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে বিরোধী বিজেপি যেমন শাসকদলকে তোপ দাগতে ছাড়ছে না তেমনি কংগ্রেসের তরফে কটাক্ষ করে পোস্টার দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে কংগ্রেসের জেলা কার্যনির্বাহী সভাপতি শান্তনু দেবনাথ বলেন, ‘কে বা কারা রাতের অন্ধকারে পার্টি অফিসের সামনে এধরনের পোস্টার লাগিয়ে রেখে গিয়েছে। এধরনের পোস্টারে লেখা বিষয়টিকে আমরা সমর্থন করি না ও আমরা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত নই। তবে কেউ হয়তো রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করতে একাজ ঘটিয়ে থাকতে পারে।’
অপরদিকে, বিরোধী বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মিঠু দাস বলেন, ‘তৃণমূলের কাছে শেখ শাহজাহানের মতো বর্বর, নারী নির্যাতনকারী ব্যক্তি স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও সাধারণ মানুষের কাছে নন। সন্দেশখালির ঘটনায় যেমন পুলিশ প্রশাসন দলদাসের ভূমিকা পালন করেছে ঠিক তেমনি এখানেও যাঁরা এই পোস্টারিং করেছে তাঁদেরকে পুলিশ ধরতে পারবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস ও তৃণমূল যে একই পাতার এপিঠ আর ওপিঠ তা এদিনের কংগ্রেস পার্টি অফিসের সামনে পোস্টার পড়া থেকেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।’
তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর মজুমদারের কথায়, ‘এই পোস্টার কংগ্রেস যদি নাই লাগিয়ে থাকে তাহলে তারা সেখান থেকে পোস্টারটিকে খুলে ফেলল না কেন এখনও? এটাই প্রশ্ন। এধরনের কাজ বিজেপিই করতে পারে। এটা তাদের একটি ঘৃণ্য রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ।’