রাঙ্গালিবাজনা: বাবা নেই। কলেজ পড়ুয়া দাদার গৃহশিক্ষকতায় পরিবারের অন্নের সংস্থান হয়। অনটন নিত্যসঙ্গী। তবু লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ফালাকাটার দেওগাঁওয়ের শিমুলচন্দ্র দেবনাথ। এ বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৪৬ নম্বর পেয়েছে জটেশ্বর হাইস্কুলের বিজ্ঞান শাখার ছাত্র শিমুল। সে ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। তবে তার স্বপ্নপূরণের পথে বাধা আর্থিক অনটন। ছেলেকে পড়ানোর টাকা কীভাবে জোগাড় করবেন সেই চিন্তায় মাথায় হাত শিমুলের মা কণিকারানি দেবনাথের। চিন্তিত দাদাও।
শিমুলদের সম্বল বলতে একটা একচালা ঘর। ওরা দুই ভাই এক বোন। সবাই মেধাবী। ২০২২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৮৭.৭১ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল শিমুল। তার দাদা প্রসেনজিৎ দেবনাথ ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে ফালাকাটা কলেজে পড়ছেন। পাশাপাশি গৃহশিক্ষকতাও করছেন। স্বল্প উপার্জন। তাই ভাইয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত তিনিও। প্রসেনজিতের কথায়, ‘ভাই কোচিং ছাড়াই জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়েছিল। তবে সফল হয়নি। সফল হলেও আমার পক্ষে ওকে কোনও বেসরকারি কলেজে পড়ানো সম্ভব হবে না। তাই ভালো র্যাংক করে সরকারি কলেজে সুযোগ পেতে হবে।’
জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় বসতে আপাতত অনলাইনে কোচিং নিচ্ছে শিমুল। পাশাপাশি আপাতত অঙ্ক নিয়ে স্নাতক স্তরে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাংলায় ৯১, ইংরেজিতে ৮৮, কেমিস্ট্রিতে ৮৪, অঙ্কে ৯৫, বায়োসায়েন্সে ৮৮ পেয়েছে শিমুল। ফিজিক্সে পেয়েছে ৭০। শিমুল বলছে, ‘আমি ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখি। জানি না স্বপ্নপূরণ হবে কি না। তবে চেষ্টা করব।’
তার বাবা প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ ছিলেন ময়নাগুড়ির আমগুড়ির বাসিন্দা। প্রাণকৃষ্ণ ২০১৬ সালে উত্তর দেওগাঁওয়ে আসেন। সেখানে রঞ্জিত দাস তাঁদের আশ্রয় দেন। পরে এক টুকরো জমি জোগাড় করেন প্রাণকৃষ্ণ। সেখানেই একটি একচালা ঘরে বাস করেন প্রসেনজিৎরা। বছর চারেক আগে মারা যান পেশায় দর্জি প্রাণকৃষ্ণ। সংসারের দায়িত্ব পড়ে বড় ছেলের ওপর।