হরিশ্চন্দ্রপুর: বিগত চার দিন ধরে ৩১ নম্বর চাঁচল হরিশ্চন্দ্রপুর জাতীয় সড়কের নবনির্মিত ফ্লাইওভারের নীচে পড়ে রয়েছেন এক বৃদ্ধ। অশক্ত শরীর। নড়াচড়ার ক্ষমতা নেই। কোমরটা কোনওরকমে উঁচু করে উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছেন। দূর থেকে মনে হচ্ছে মৃতপ্রায়। জাতীয় সড়কের ওপর জনবহুল তুলসীহাটা ভবানীপুর এলাকায় পথ চলতি মানুষেরা দেখছেন কিন্তু কেউ এগিয়ে আসছেন না সাহায্য করতে। দেখা মেলেনি কোনও জনপ্রতিনিধির।
এমনকি এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাতের বেলা হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ পেট্রোলিংয়ের গাড়িতে থাকা আধিকারিকদের এই ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও তারাও কোনও ভ্রুক্ষেপ করেন নি। ওই বৃদ্ধ স্থানীয় বাসিন্দাদের কারও পরিচিত নয়। বুধবার সকালে উত্তরবঙ্গ সংবাদের প্রতিনিধি বিষয়টি লক্ষ্য করে হরিশ্চন্দ্রপুরের বিডিওকে এই ব্যাপারে জানালে তৎপর হয় প্রশাসন। অবশেষে বিডিও সৌমেন মণ্ডলের নির্দেশে অ্যাম্বুল্যান্স এবং পুলিশ পাঠিয়ে ওই অজ্ঞাত পরিচয় অসুস্থ বৃদ্ধকে উদ্ধার করে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরিচয় মিলেছে তার। ওই অসুস্থ বৃদ্ধের নাম গণেশ দাস(৭০)। বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতাল রোড এলাকায়। প্রশাসনের তরফ থেকে তার বাড়ির লোককেও খবর দেওয়া হয়েছে।
৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের কাজে নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থার এক কর্মী সুজন মণ্ডল বলেন, বিগত চারদিন থেকে ওই বৃদ্ধকে রাস্তার ধারের ফ্লাইওভারের নীচে জমিতে পড়ে থাকতে দেখতাম। তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি, খাবার দেবার চেষ্টা করেছি কিন্তু তাকে দেখে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়নি। আজকে দেখলাম প্রশাসন তাকে উদ্ধার করল।
এপ্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর এক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অমলকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘আমরা ব্লক প্রশাসনের নির্দেশে আজকে ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। তিনি বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা এবং অপুষ্টজনিত রোগের শিকার। তার চিকিৎসা চলছে। অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।’ হরিশ্চন্দ্রপুর-১ এর বিডিও সৌমেন মণ্ডল বলেন, ‘ঘটনার কথা জানতে পেরেই আমি স্বাস্থ্য দপ্তরকে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ দেই। ওনার যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সে বিষয়ে নজর দেওয়া হচ্ছে।’