উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত সিকিম। চারদিকে শুধু ধ্বংসস্তূপ। নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে বহু এলাকা। চলছে উদ্ধারকাজ। ভয়াল আকার নিয়েছে তিস্তা। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শনিবার কালিম্পংয়ের উদ্দেশে রওনা দেবেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এদিন দুপুর ১টা নাগাদ বাগডোগরা থেকে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে যাবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বুধবার উত্তর সিকিমের লোনাক হ্রদ ভেঙে বিপুল জলরাশি উপচে পড়ে তিস্তায়। সিকিমে ১৩টি সেতু ভেঙে পড়েছে। প্রভাব পড়েছে উত্তরবঙ্গেও। সিকিমের সঙ্গে বাংলার যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক পুরোপুরি ভেঙে গিয়েছে। তিস্তা নদী সংলগ্ন এলাকা থেকে বহু মানুষকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ছোট বড় ধস নেমেছে। অনেক পর্যটককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকিদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
শুক্রবারই পরিস্থিতি নিয়ে জিটিএ প্রধান অনীত থাপার সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে আসেন অনীত। সেখানে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সেই সময় মুখ্যসচিবের ফোন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং ক্ষতি নিয়ে আলোচনা করেন জিটিএ প্রধান। তখন অনীতকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকারের তরফে কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কালিম্পং সহ পাহাড়ের, সেটা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী জিটিএ প্রধানকে আশ্বস্ত করেন বলে জানা যায়। এদিকে জিটিএ প্রধান কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
সূত্রের খবর, অনীত মুখ্যমন্ত্রীকে ফোনে কথা বলার সময় বলেন, ‘সিকিমকে কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিলে কালিম্পংকে কেন নয়? আমরা তো ভারতের মধ্যেই থাকি। আমাদের এখান থেকেও বিজেপির সাংসদ রয়েছে। তাহলে আমাদের কেন টাকা দেবে না কেন্দ্র?’ মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে। মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং প্রকৃতির ভয়াবহতায় পাহাড়ের পরিস্থিতি দিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী। আর তা খতিয়ে দেখতে পাহাড়ে বিশেষ দল পাঠানো হতে পারে বলেও অনীতকে জানিয়েছিলেন তিনি।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় ৩০০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কালিম্পং জেলায়। বিডিওরা জেলার সব প্রান্ত পরিদর্শন করেছেন। সিকিম পাহাড়ে নতুন করে দুর্যোগ দেখা দিলে ভাসতে পারে সমতল। তাই সতর্কবার্তা পেয়ে জলপাইগুড়ির তিস্তা পাড়ে মাইকিং শুরু করেছে প্রশাসন। বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।