সানি সরকার, শিলিগুড়ি: স্টেক হোল্ডারদের অন্ধকারে রেখে দুই রাজ্যের মধ্যে পরিবহণ চুক্তি বা রেসিপ্রোকাল এগ্রিমেন্ট নয়, এই দাবিতে সরব হল শিলিগুড়ির (Siliguri) বিভিন্ন পরিবহণ সংগঠন। সিকিমের শেয়ার ক্যাব (Sikkim Cab) নিয়ে সমতল এবং দার্জিলিং পাহাড়ে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার গাড়ির মালিক-চালকদের বিভিন্ন সংগঠনকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিল হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক (HHTDN)। এইচএইচটিডিএনের ট্রান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেশন কমিটির তরফে জয়ন্ত মজুমদার বলেন, ‘সমাধানের লক্ষ্যে এদিনের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। আশা করছি ভবিষ্যতে কোনও ধরনের সমস্যা হবে না।’
দুই রাজ্যের চুক্তির ক্ষেত্রে তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার দাবি তুলেছে বিভিন্ন সংগঠন। বাংলায় গাড়ি চালাতে গিয়ে যে সুবিধা পাচ্ছে সিকিমের গাড়ি, সিকিমেও যাতে তেমন ‘ছাড়’ পাওয়া যায়, দাবি জানিয়েছেন অনেকে। এইচএইচটিডিএনের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘সিকিমের গাড়ির সঙ্গে আমাদের কোনও বিরোধ নেই। তবে রেসিপ্রোকাল এগ্রিমেন্টের আগে যাতে আমাদের মতামত নেওয়া হয়, সেই আর্জি জানিয়ে রাজ্যের পরিবহণ দপ্তরকে চিঠি দিচ্ছি আমরা। মূল বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
শিলিগুড়ি এবং দার্জিলিং পাহাড়ে শেয়ার ক্যাব চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিকিমের পরিবহণ দপ্তর। সেই খবর জানাজানি হতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এখানকার গাড়িচালকরা। সিকিমের গাড়ির জন্য তাঁদের রুটিরুজিতে টান পড়বে বলে আশঙ্কিত গাড়ির চালক-মালিকরা। পুরো পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট সমস্ত সংগঠনকে নিয়ে বৈঠকে বসে এইচএইচটিডিএন।
এই রাজ্যের সর্বত্র সিকিমের গাড়ি চলাচল করলেও, সিকিমে নির্দিষ্ট জায়গার বাইরে এখানকার গাড়ি যেতে পারে না। যা নিয়ে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে স্থানীয় গাড়িচালক ও মালিকদের মধ্যে। এদিন তাঁদের প্রতিনিধিরা বলেন, ‘এরপর যদি সিকিমের ক্যাব চালু হয়, তবে আমাদের পেটে লাথি পড়বে।’ তাই এখানকার গাড়িও যাতে সিকিমের সর্বত্র চলতে পারে, সেই দাবি তোলেন তাঁরা।
এরপর বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সর্বসম্মত দাবি সুনির্দিষ্ট করতে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাগডোগরা ট্যাক্সি ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজ ভৌমিক, জাতীয়তাবাদী ট্যাক্সি অ্যান্ড প্রাইভেট কার ড্রাইভার ইউনিয়নের (এনজেপি ইউনিট) সভাপতি উদয় সাহা তাঁদের মতামত তুলে ধরেন সেখানে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিটি একটি খসড়া রিপোর্ট তৈরি করবে। সংগঠনগুলো তাদের দাবিদাওয়া লিখিতভাবে জানাবে। তারপর রাজ্যের পরিবহণ দপ্তরের যুগ্ম সচিবের হাতে তুলে দেওয়া হবে মূল দাবিপত্র।