শিলিগুড়ি: পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঘুষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমে শিলিগুড়ি আদালতের সরকারি কর্মচারীদের হাতে ঝিঙে তুলে দিলেন আইনজীবীরা। শনিবার দুপুরে শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা ব্যাগ ভর্তি করে ঝিঙে নিয়ে আদালতের সরকারি কর্মীদের ঘরে ঢুকে পড়েন। এরপর তাঁদের হাতে ঝিঙে তুলে দিতে চান। যদিও সরকারি কর্মীরা ঝিঙে নিতে অস্বীকার করেন। সেখানে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মীর টেবিলের ওপর আইনজীবীরা ঝিঙে রেখে চলে আসেন। তার আগে ঘুষের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড ও ঝিঙে হাতে নিয়ে আদালত চত্বরে আইনজীবীরা মিছিলও করেন।
শিলিগুড়ি আদালতে ঘুষ চাওয়াকে কোড ল্যাঙ্গুয়েজে ঝিঙে চাওয়া বলা হয়। অভিযোগ, সার্টিফাইড কপি বের করা, বেল বন্ডের টাকা জমা করা, মামলা সংক্রান্ত নোটিশ ইস্যু করা, মামলার নোটিশ পাঠানো, রেকর্ড খুঁজে দেওয়া-সব ক্ষেত্রেই সিংহভাগ সরকারি কর্মচারী টাকা দাবি করেন। যার বিরুদ্ধে শিলিগুড়ির বার অ্যাসোসিয়েশন প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
সেই মতো এদিন আদালতের সমস্ত ধরণের কাজ থেকে আইনজীবীরা বিরত থাকেন। ঘুষ বন্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ-স্লোগানের পাশাপাশি এদিন বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে ডিস্ট্রিক্ট জাজকে নতুন করে চিঠি দেওয়া হয়। পাশাপাশি ওয়েস্ট বেঙ্গল কোর্ট স্টাফ এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারিকেও গোটা বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের কাছেও মেল ও পোস্ট করে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এদিনের কর্মসূচি নিয়ে শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি অলোক ধারা বলেন, ‘যে সমস্যা তৈরি হচ্ছে সেটি সমাধানের ক্ষেত্রে ডিস্ট্রিক্ট জাজ পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। কোর্ট চত্বরে সৌহার্দ্য বজার রেখে কাজ করা প্রয়োজন। সেজন্য দ্রুত আইনজীবীদের পাশাপাশি সরকারী কর্মীদের নিয়ে তিনি একসঙ্গে বৈঠক করতে চান। যাতে এই ঘটনাগুলি আরও বেড়ে না যায়।’
জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে আদালতে অভিযোগ জানানোর সেল খুলে দেওয়া হচ্ছে। যেখানে ঘুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো যাবে। অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
শিলিগুড়ির আদালতে ১৩টি কোর্ট চলে। আদালতে সব মিলিয়ে প্রায় ১১০ জন সরকারি কর্মী রয়েছেন। আইনজীবীদের অভিযোগ, সিংহভাগ কর্মী ঘুষ চাওয়ার ঘটনায় জড়িত। শুক্রবার বার অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত হয়। আইনজীবীদের কথায়, প্রয়োজনে ঘুষের প্রতিবাদে লাগাতার আন্দোলন করা হবে।