মানিকচক: মানিকচকের খোলা বাজারে বিকোচ্ছে সরকারি ত্রাণের জন্য বরাদ্দ ত্রিপল। একেবারে প্রকাশ্যে চলছে দর কষাকষি করে বেচাকেনা। মানিকচকের উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি হাটে সরকারি ত্রিপল বিক্রির ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে। আর ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওকে কেন্দ্র করে শোরগোল মানিকচকজুড়ে। যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি উত্তরবঙ্গ সংবাদ। তবে এই ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও বেশ কয়েকবার শুধু মানিকচক নয়, মালদা জেলার বিভিন্ন এলাকায় খোলা বাজারে সরকারি ত্রিপল বিক্রির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বারবার সরকারি ত্রিপল বিক্রির ঘটনা সকলের সামনে এলেও কোনও হেলদোল নেই প্রশাসনের।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে সরকারি ত্রিপল বিক্রি করতে যে ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে তিনি হলেন খোদ উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নাসির শেখের জামাই রেফাল শেখ। রেফাল শেখ ভূতনির উত্তর চণ্ডীপুরের চম্পা নগর হাটে সরকারি ত্রাণ প্রকল্পের ত্রিপল ৮০০ টাকা জোড়া দামে সাইকেলে করে বিক্রি করছেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দর কষাকষি করে গ্রাহকদের ত্রিপল কিনতেও দেখা যাচ্ছে। কোথা থেকে পেলেন সরকারি সিলমোহর লাগানো ত্রিপল সেই প্রশ্নের উত্তরে রেফাল শেখের সাফ জবাব, তার কাছে আরও অনেক ত্রিপল আছে, লাগলে বলবেন। কিন্তু কোথা থেকে এই ত্রিপল পেলেন সেই ব্যাপারে কোনও সদুত্তর দেননি তিনি।
এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান শেখ অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের এলাকার ভাঙন দুর্গত মানুষেরা ঘরবাড়ি হারিয়ে মাথা গোজার জন্য ত্রিপল পাচ্ছেন না। একটা ত্রিপলের জন্য হাহাকার করছেন মানুষ। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে খোলা বাজারে সরকারি ট্রিপল বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।‘
সিপিআইএমের জেলা নেতা শ্যামল বসাকের দাবি, গত মাসে ব্লক প্রশাসন প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েতকে অতি বর্ষণে দুর্গত মানুষদের জন্য ত্রিপল দিয়েছিল। প্রায় পাঁচশোর মতো ত্রিপল পায় উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। সেই ত্রিপলগুলি পঞ্চায়েতের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন। হয়তো সেই ত্রিপল নিজের নিকট আত্মীয়কে দিয়ে বাজারে বিক্রি করাচ্ছেন উপপ্রধান। ত্রিপল বিক্রির ঘটনায় শাসকদলকে বিঁধেছেন বিজেপি জেলা নেতা গৌড়চন্দ্র মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল মানেই চোর। ত্রিপল চুরি করেছে এটা তো তাদের অধিকার। ভাঙন কবলিত বা প্রবল বর্ষণে ঘরবাড়ি যাদের ভেঙে গেছে তাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে ত্রিপল পাঠানো হয় পঞ্চায়েতগুলিতে। তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানরা, সেই ত্রিপলগুলি দুঃস্থ মানুষদের না দিয়ে বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে।‘ তবে বিরোধীদের অভিযোগকে নস্যাৎ করে উপপ্রধান নাসির শেখ জানান, তিনি নিজেও এই ভিডিওটি দেখেছেন। কিন্তু কোথা থেকে তার আত্মীয়র কাছে ত্রিপল আসলো বা কোথায় সেই ত্রিপল বিক্রি হচ্ছে সেই ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।