হরিশ্চন্দ্রপুর: সম্পত্তির লোভে ক্যানসার আক্রান্ত বৃদ্ধা মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দুই ছেলের বিরুদ্ধে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়াটোলা গ্রামের ঘটনা। এই নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানাতেও অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। অবশেষে পুলিশি হস্তক্ষেপে নিজের স্বামীর বাড়িতে ফিরতে পারলেন ওই মহিলা।
জানা গিয়েছে, তুলসীহাটার নয়াটোলার বাসিন্দা রেজিনা বেওয়া(৬০) দীর্ঘ এক বছর ধরে ক্যনসারে আক্রান্ত। ১৪ বছর আগে স্বামী মারা গিয়েছে। শেষ সম্বল হাতের দুই বিঘা জমি। চাষাবাদ করে নিজের চিকিৎসার খরচের পাশাপাশি দুমুঠো আহারের জোগাড় করত। অভিযোগ, তার দুই ছেলে শেখ রেজাউল ও শেখ রাজু কোনওরকম তো খরচ দেয় না, তার উপরে দুই বিঘা জমি মায়ের কাছ থেকে জোরপূর্বকভাবে নিজেদের নামে করে নিতে চাই। জমি দিতে অস্বীকার করলে বৃদ্ধা মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। মায়ের পাশে মেয়েরা দাঁড়ালে তাদেরকেও বেধরক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্কিত বৃদ্ধা মা। বাড়িতে ঢুকতে ভয় পাচ্ছেন। আগে তিনি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন চায়ের দোকানে রাত কাটাতেন। মেয়েদের নজরে আশায় অবশেষে গত তিন দিন থেকে গ্রামেই মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন রেজিনা।
রেজিনা বেওয়া বলেন, ‘গত এক বছর থেকে ক্যানসার হয়েছে। নিজের যা জমানো আছে তাই দিয়ে চিকিৎসা করি। ছেলেরা এখন স্বামীর নামে থাকা দুই বিঘা জমি জোরপূর্বক লিখে দিতে বলছে। কিন্তু আমি এটা দেব না এটা আমার শেষ সম্বল। তাই ওরা আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমি এই বিষয়ে হরিশচন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ করেছি।’
এদিকে ছেলে শেখ রাজুর অভিযোগ, তার বাবার নামে ১০ বিঘা ও মায়ের নামে ৩ বিঘা জমি ছিল। বাবার ৮ বিঘা জমি বিক্রি করে মেয়ে ও জামাইকে দিয়ে দিয়েছে। মায়ের তিন বিঘা জমি মেয়েদের নামে করে দিয়েছে। বর্তমানে বাবার নামে দুই বিঘা জমি বেঁচে রয়েছে। সেই দুই বিঘা জমিও মেয়েদের নামে করে দিতে চাইছে। তাই তারা মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে এব্যাপারে গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ করলে তাদেরকেও ছেলেদের হুমকির মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। চাঁচল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সোমনাথ সাহা জানান, এই ঘটনায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। আর ওই বৃদ্ধা মহিলাকে তার বাড়িতে ফেরানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।