উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ টানা ১৬ দিন অপেক্ষা করলেন। অপেক্ষায় ছিলেন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ থেকে কবে মুক্তি পাবে ছেলে। ১৭ দিনের মাথায় বিপর্যয় কাটিয়ে সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে এল ছেলে। কিন্তু ছেলেকে আর দেখতেই পেলেন না বাবা। উদ্ধারের একদিন আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাবা। মারা গেলেন ঝাড়খণ্ডের আটকে থাকা এক শ্রমিকের বাবা বাসেত মুর্মু।
গত ১১ নভেম্বর উত্তরকাশীতে সুড়ঙ্গে ধস নামায় ভিতরে আটকে যায় ৪১ জন শ্রমিক। তাঁদের উদ্ধার করতে বারবার ব্যর্থ হতে হয়েছে উত্তরাখণ্ড প্রশাসন, বিআরও ও এনডিআরএফকে। তবুও উদ্ধারকার্যে কোনও খামতি রাখেনি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার। অবশেষে ১৭ দিনের মাথায় র্যাট হোল মাইনিং করে আটকে থাকা প্রত্যেককেই উদ্ধার করে আনা হয়। টানা ১৭ দিন উৎকণ্ঠায় কেটেছে প্রত্যেক শ্রমিকের পরিবারের। এই আনন্দের মাঝেও রয়ে গেল এক নিরানন্দের গল্প।
সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ শ্রমিকের মধ্যে একজন ঝাড়খণ্ডের সিংভূমের বাহাদা গ্রামের বাসিন্দা ভাক্তু মুর্মু। সুড়ঙ্গে ধসের কারণে আটকে পরে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকেই দুশ্চিন্তায় ছিলেন ভাক্তুর পরিবার। ঘটনার পর থেকে ছেলের উদ্ধার নিয়ে বিচলিত হয়ে পড়েন। তাঁদের বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে গিয়েছিল। ভাক্তু টানেলের ভিতর থেকে পরিবারের লোকের সঙ্গে কথা বললেও কাটেনি উৎকণ্ঠা। অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন ভাক্তুর বাবা বাসেত মুর্মু। গত কয়েক দিন ধরে মন খারাপ করে বসেছিলেন বাসেত। অপেক্ষা ছিল ছেলের ঘরে ফেরার। টানা ১৬ দিন ছেলের অপেক্ষায় কাটিয়ে দিলেও ছেলের মুখ দেখা হলনা তাঁর। ছেলে যেদিন উদ্ধার হলেন, সেই দিনই না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন বাসেত। হৃদরোগই কেড়ে নিল বাসেতের প্রাণ। এই ঘটনা শোনার পর ভেঙে পড়েছেন শ্রমিক ভাক্তুও। তাঁর একটাই আক্ষেপ, বাবা দেখে যেতে পারলেন না সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার হওয়া তাঁর এই জীবিত ছেলেকে।