নাগরাকাটা: চা বাগান নিয়ে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) তৈরির পথে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই চা শিল্প নিয়ে গঠিত মন্ত্রীগোষ্ঠীর বৈঠকে এব্যাপারে প্রস্তাব গৃহীত হয়ে গিয়েছে। এখন তা শুধু অনুমোদনের অপেক্ষায়। যাঁরা বিধিনিয়ম মেনে বাগান চালাবেন এসওপিতে তাঁদের পুরস্কৃত করার কথা থাকছে। পাশাপাশি বিনা নোটিশে বাগান বন্ধ করে চলে গেলে তিন মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর তা পরিত্যক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হতে পারে। এরপর রাজ্য সরকার সেই বাগানকে নিলামে তোলার ব্যবস্থা করবে। সেক্ষেত্রে নতুন যে মালিক বাগান নেবেন তাঁকে রাজ্যের কাছে শ্রমিক-কর্মচারীদের অন্তত ৩ মাসের মজুরি-মাইনে আগাম জমা রাখতে হবে। পাশাপাশি সিকিউরিটি মানি হিসেবে গচ্ছিত রাখতে হবে ২ কোটি টাকা। থাকতে হবে বাগান চালানোর এক বছরের অভিজ্ঞতা। শনিবার তৃণমূল কংগ্রেসের একটি কর্মীসভায় নাগরাকাটায় এসে রাজ্যসভার দলীয় সাংসদ ও চায়ের মন্ত্রীগোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য প্রকাশ চিকবড়াইক বলেন, ‘এই এসওপি আশা করছি দ্রুত জারি হয়ে যাবে। শ্রমিক স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে ও একটা বাগানও যাতে বন্ধ না থাকে তা নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর।’
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে চা শিল্প নিয়ে মন্ত্রীগোষ্ঠীর (গ্রুপ অফ মিনিস্টার্স) পুনর্গঠন করা হয়। এতে চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। এর বাইরে স্থায়ী সদস্য হিসেবে আছেন রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চিকবড়াইক, শিল্প বাণিজ্যমন্ত্রী শশী পাঁজা, কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ ও অনগ্রসর সম্প্রদায় কল্যাণ এবং আদিবাসী উন্নয়নমন্ত্রী বুলু চিকবড়াইক। এর বাইরে স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে জিটিএ-র চেয়ারম্যান অনীত থাপা সহ শ্রম, কৃষি ও শিল্প বাণিজ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিদের। অনগ্রসর সম্প্রদায় কল্যাণমন্ত্রী বুলু চিকবড়াইক বলেন, ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। যেহেতু চা বাগানের সঙ্গে জমির বিষয়টি জড়িয়ে আছে সেকারণে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের মতামত চাওয়া হয়েছে। শুখা মরশুম এলেই এক শ্রেণির মালিকপক্ষের বাগান বন্ধ করে চলে যাওয়ার প্রবণতা রোখা রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য।’
এদিকে চা শ্রমিকদের বসবাসের স্থানেই রাজ্য সরকার জমির পাট্টা দেওয়ার যে কর্মসূচি শুরু করেছে এক শ্রেণির মালিকপক্ষ এনওসি দিতে গড়িমসি করছে বলে প্রকাশ চিকবড়াইক এদিন অভিযোগ করেছেন। তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়ন ১৯ ফেব্রুয়ারি সংকোশ চা বাগান থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি এলেনবাড়ি বাগান পর্যন্ত যে ১১ দিনের পদযাত্রা শুরু করতে চলেছে সেখানে সমস্ত বিষয় তুলে ধরা হবে বলে প্রকাশ জানিয়েছেন। এদিন নাগরাকাটার সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেডিএ-র চেয়ারম্যান গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা, নাগরাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্জয় কুজুর, তৃণমূলের নাগরাকাটা ব্লক কমিটির সভাপতি কাজি পান্ডে প্রমুখ।