দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ (Raiganj) ব্লকের বিন্দোলে একটি বেসরকারি জুনিয়ার হাইস্কুলের (High School) প্রধান শিক্ষকের (Head Teacher) বিরুদ্ধে লাঠি হাতে খুদে ছাত্রদের (School Student) দিয়ে ভবন তৈরির ইট বহন করার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে এই ঘটনার একটি একটি ভিডিও (Viral Video) সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও ওই ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি উত্তরবঙ্গ সংবাদ। ভিডিও ক্লিপে দেখা যাচ্ছে, স্কুলের সীমানা প্রাচীরের বাইরে রাখা রয়েছে হাজার হাজার ইট। লাঠি হাতে প্রধান শিক্ষক ছাত্রদের দিয়ে ইট বহন করাচ্ছেন। খুদে পড়ুয়াদের দিয়ে এভাবে ভারী ইট বহন করার দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই শিক্ষামহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অবিলম্বে ওই স্কুলের স্বীকৃতি বাতিল ও প্রধান শিক্ষককে গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে।
যদিও রাজা রামমোহন জুনিয়র শিক্ষানিকেতনের প্রধান শিক্ষক হজরত আলির দাবি, ‘ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পর ছাত্রদের শরীর ব্যথা হয়ে গিয়েছিল। তাই তারা নিজেরা বাইরে থেকে ইটগুলি নিয়ে স্কুলের ভিতরে নিয়ে আসছিল। আমি তা দেখতে পেয়েই তাদের লাঠি নিয়ে তাড়া করি। এরপর তারা ইট রেখে পালিয়ে যায়।’ যদিও প্রধান শিক্ষকের আজব দাবি মানতে চাননি গ্রামবাসীরা। তাঁরা জানান, স্কুলের মালিক নিজেই প্রধান শিক্ষক। উনি দাঁড়িয়ে থেকে পড়ুয়াদের দিয়ে ভবনের ইট বহন করিয়েছেন।’
বিন্দোলের রতনপুরে অবস্থিত এই বেসরকারি জুনিয়ার স্কুলে প্রায় ২৫০ জন পড়ুয়া আছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অনুমোদনের জন্য ইতিমধ্যে আবেদন করেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এর মধ্যে এই ঘটনায় আলোড়ন তৈরি হয়েছে। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বঙ্গরত্ন অমিত সরকার বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে খুদে পড়ুয়ারা ইট বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। সন্তানতুল্য খুদে পড়ুয়াদের দিয়ে এই কাজ কখনই করানো যায় না। প্রশাসনের তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’
বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জিন্নাতুন খাতুন বলেন, ‘অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রশাসনকে তদন্ত করার জন্য বলব। এভাবে কখনই খুদে পড়ুয়াদের দিয়ে ভারী কাজ করানো যায় না। যদি হয়ে থাকে তবে খুব অন্যায় হয়েছে।’ প্রধান শিক্ষক কীভাবে খুদে পড়ুয়াদের দিয়ে এই অমানবিক কাজ করালেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসী।
রায়গঞ্জ উত্তর অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক কল্যাণী ওরাওঁ বলেন, ‘স্কুলটি এনওসির জন্য আবেদন করেছে। কীভাবে ছাত্রদের দিয়ে এই ধরনের কাজ করানো হল তা প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাওয়া হবে। আমরা অবশ্যই তদন্ত করব।’