বক্সিরহাট: স্কুলের ছায়া গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ার প্রতিবাদে প্রধান শিক্ষককে ঘরে তালাবন্দি করে রাখলেন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। এমনকি গাছ কাটার প্রতিবাদে স্কুল চত্বরে নতুন করে ৫০টি গাছের চারা রোপণ সহ স্কুলের মাঠ সংস্কারের দাবিতে ভানুকুমারী-কামাখ্যাগুড়ি রাজ্য সড়কের উপর টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তাঁরা। সোমবার তুফানগঞ্জ-২ নম্বর ব্লকের মহিষকুচি-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাকলা রামকৃষ্ণ উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় বক্সিরহাট থানার পুলিশ। শেষ পর্যন্ত পুলিশের তরফে ছাত্র-ছাত্রীদের দাবিপূরণের আশ্বাস দেওয়া হলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা। এদিন তিন ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলার ফলে ওই রুটে ব্যাহত হয় যান চলাচল।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘবছর ধরে ওই স্কুল চত্বরে রয়েছে একটি কদম গাছ। তীব্র গরমে ওই গাছের নীচেই বসত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। তবে রবিবার ছুটির দিন উপলক্ষ্যে স্কুল চত্বরে থাকা ওই ছায়া প্রদানকারী কদম গাছটি কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে এদিন স্কুলে এসে ওই কদম গাছটির গুঁড়ি কাটা অবস্থায় দেখতে পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে যায় ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। এমনকি স্কুলের মাঠটি নিচু হওয়ায়, হালকা বৃষ্টিতেই জমে যায় জল। ফলে বেশিরভাগ সময় মাঠে জল-কাঁদা জমে থাকায় মাঠে খেলাধুলো করার মত পরিস্থিতি নেই ছাত্র-ছাত্রীদের। গোপনভাবে স্কুল চত্বরে থাকা ওই গাছটি কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে জবাব চান ছাত্র-ছাত্রীরা।
এ ব্যাপারে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রজনীকান্ত বর্মন বলেন, ‘গাছটি বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল ফলে হালকা হাওয়া বাতাসের জেরে গাছটি উপড়ে পরে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ফলে ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি সাপেক্ষেই গাছটি কাটা হয়েছে। বহিরাগত কেউ ছাত্র-ছাত্রীদের ভুল বুঝিয়েছেন। তাই তাঁদের তালা বন্ধ করে রাখার পাশাপাশি বিক্ষোভ আন্দোলনে নেমেছে স্কুলের পড়ুয়ারা। তবে স্কুল চত্বরে নতুন করে গাছের চারা রোপণ করা সমেত স্কুলের মাঠ সংস্কারের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’
এদিকে, সরকারি স্কুলে গাছ কেটে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে রাজ্যের শাসকদল ঘনিষ্ঠ ম্যানেজিং কমিটি ও স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। বিজেপির তিন নম্বর মণ্ডল সভাপতি প্রভাত বর্মন বলেন, ‘সরকারি গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যেই গোপনভাবে গাছটি বিক্রি করে দিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি।’
যদিও ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রসিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিরোধীদের অভিযোগ সমস্ত ভিত্তিহীন। গোপনভাবে নয় বরং গাছটি বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল তাই কমিটিতে আলোচনা করেই চার হাজার টাকার বিনিময়ে ওই গাছটি কেটে বিক্রি করা হয়েছে।’