বালুরঘাট, তপনঃ পুরুষত্ব নিয়ে খোঁচা। এর প্রতিবাদ করায় স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে শুরু হয়েছিল বিবাদ। সেই কলহের জেরে বিয়ের মাত্র তিন মাস পরেই বাবার বাড়ি চলে যান স্ত্রী। স্ত্রীকে ফেরাতে শ্বশুরবাড়ি গিয়েও ব্যর্থ হতে হয় ওই ব্যক্তিকে। অবশেষে স্ত্রীর বিরহে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই তরুণ। তেমনটাই অভিযোগ পরিবারের। স্ত্রীর পরিবার তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছে বলে বালুরঘাট থানায় অভিযোগ জানান মৃত তরুণের বাবা। তার জেরে শ্বশুরকে তপন থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে শুক্রবার বালুরঘাট জেলা আদালতে পেশ করে।
তপনের মহানাজ গ্রামের বাবু মোল্লার মেয়ে রোজিনা খাতুনের সঙ্গে শ্রীরামপুর গ্রামের অহেল আলি সরকারের ছেলে রাসেল সরকারের বিয়ে হয়েছিল গত বছরের জুলাই মাসে। বিয়ের মাস তিনেক পর থেকেই ওই দম্পতির মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে। এর জেরে ওই গৃহবধূ তাঁর বাপের বাড়ি গিয়ে থাকতে শুরু করেন। বারবার স্ত্রীকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন স্বামী। স্ত্রী ফিরে না আসায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। গত ২৯ এপ্রিল নিজের বাড়িতেই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় রাসেল সরকারের।
এই ঘটনায় রাসেলের বাবা অহেল আলি সরকার তপন থানায় অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার পুত্রবধূ ও তার পরিবার পুরুষত্ব নিয়ে আমার ছেলেকে খোঁটা দেওয়া ছাড়াও নানারকম মানসিক নির্যাতন চালাত। যেদিন আমার ছেলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়, সেদিন আমরা বাড়িতে কেউ ছিলাম না। বাড়ির মহিলারা পাশেই একটি বিয়েবাড়িতে গিয়েছিল। আমি কাজে বাইরে গিয়েছিলাম। সেই সময় ছেলের শ্বশুরবাড়ির একদল সদস্য আমাদের বাড়িতে এসে ছেলের সঙ্গে অশান্তি করে যায়। এরপরেই আমার ছেলে আত্মঘাতী হয়েছে। তাই ওদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেছি।’
মৃত রাসেল সরকারের স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি, কাকাশ্বশুরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলেও শুধুমাত্র শ্বশুর বাবু মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে তপন থানার পুলিশ। এদিন তাঁকে বালুরঘাট আদালতে পেশ করা হয়।
সরকার পক্ষের আইনজীবী জয়ন্ত মজুমদার বলেন, ‘এক যুবককে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় বাবু মোল্লা নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পেশ করা হয়েছিল। বালুরঘাট আদালতের মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারক গৈরিক রায় ধৃতকে ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।’