পুরাতন মালদাঃ পুরাতন মালদা ব্লকের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধাইপুরের দীঘিপাড়া এলাকা। ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যার পর থেকে এখানে ২৫ টি পরিবারের প্রায় ১৫০ জন মানুষ বসবাস করে। প্রত্যেকে তার আগে মাধাইপুরে মহানন্দার তীরে বসবাস করত। কিন্তু বন্যায় ঘর বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় নিরাপদ আস্তানার খোঁজে ওই পরিবার গুলি দীঘিপাড়ায় বসবাস শুরু করে। কিন্তু তারপর কেটে গেছে দীর্ঘ ছয় বছর। বহুবার বিদ্যুৎ দপ্তরের কাছে আবেদন করেও মেলেনি বিদ্যুৎ সংযোগ। বিদ্যুৎহীন হয়ে রয়েছে দীঘিপাড়া। প্রত্যেক বছরই ভয়াবহ গরমের মধ্যে দুর্বিষহ অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে পরিবারগুলিকে। কিন্তু একাধিকবার বিদ্যুৎ দপ্তরের দ্বারস্থ হয়েও হয়নি সুরাহা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার জন্য মোটা অংকের কাটমানি চাইছে ঠিকাদাররা। কিন্তু ওই ২৫টি পরিবারের প্রত্যেকটাই দিনমজুর পরিবার। দিন আনে দিন খাওয়া সংসার। ফলে তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি মোটা অংকের কাটমানি দেওয়া। তার জন্যই বসেনি বিদ্যুতের খুঁটি। বিদ্যুৎ সংযোগ হয়নি দীঘি পাড়ায়। শুধু বিদ্যুৎ-ই নয়, গ্রামে নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা। নেই গ্রামে ঢোকার পথ। আলপথ দিয়েই যাতায়াত করতে হয় গ্রামবাসীদের। ন্যূনতম নাগরিক পরিষেবা টুকুও দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগের দাবিতে বুধবার গ্রামেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় গৃহবধূ রুবি বিবি বলেন, “আমাদের প্রচন্ড সমস্যার মধ্যে দিন কাটাতে হয়। গ্রামে রাস্তা নেই, বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ দপ্তরে জানিয়েছি, স্থানীয় পঞ্চায়েত কে জানিয়েছি। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। সন্ধ্যার পর বাচ্চাদের নিয়ে আমরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।”
স্থানীয় বাসিন্দা মোল্লা শেখের অভিযোগ, “৬ বছর ধরে আমরা এখানে বাস করছি। কিন্তু কোন পরিষেবা পাচ্ছিনা। এতদিন পরেও গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ হল না। খুব কষ্টের মধ্যে দিন কাটাতে হয় আমাদের। আমাদের সঙ্গে এই অবহেলা কেন হচ্ছে বুঝতে পারছি না।”
স্থানীয় বাসিন্দা রহমান শেখের হুশিয়ারি, “এবার যদি দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ না হয় তবে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব। ঠিকাদাররা আমাদের কাছে কাটমানি চাইছে। আমরা দিতে পারছিনা বলেই বিদ্যুৎ পরিষেবা পাচ্ছি না। এবার আমরা বিদ্যুৎ দপ্তর ঘেরাও করব বা পথ অবরোধ করব।” অভিযোগ খতিয়ে দেখে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বিদ্যুৎ দপ্তরের রিজিওনাল ম্যানেজার উজ্জ্বল রায়।