রায়গঞ্জ: রামধনু পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন। তৃণমূলকে হারিয়ে প্রধান হলেন কংগ্রেস সদস্যা এবং উপপ্রধান হলেন বিজেপির। রায়গঞ্জ ব্লকের ৪ নম্বর বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেস, বিজেপি ও বামেরা মিলে বোর্ড গঠন করল। প্রধান হলেন কংগ্রেসের জিন্নাতুন খাতুন এবং উপপ্রধান হলেন বিজেপির ফুল কুমার বর্মন। এই পঞ্চায়েতে ২৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ৮টি, কংগ্রেস ৪টি, বিজেপি ৯টি, বাম ১টি ও নির্দল জিতেছিল ১টি। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় এই পঞ্চায়েত ছিল ত্রিশঙ্কু। শুক্রবার প্রধান গঠনের সময় বাম, কংগ্রেস ও বিজেপি মিলে ১৩ জনের সমর্থনে প্রধান হন কংগ্রেসের জিন্নাতুন খাতুন। বেশি সংখ্যক আসন পেলেও বিজেপির ফুল কুমার বর্মন হন উপপ্রধান। বোর্ড গঠনের ৪৮ ঘণ্টা আগে একজন কংগ্রেস ও একজন নির্দল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেও শেষ পর্যন্ত রামধনু জোট বোর্ড গঠন করায় হতাশ তৃণমূল কর্মীরা। তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ এরজন্য ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বকে দায়ী করেছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে রাখলেও এবার তাদের হাতছাড়া হল। শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মনের বিধানসভা এলাকায় ৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবার বিরোধীদের দখলে গেল।
বোর্ড গঠনের পর উচ্ছ্বাসে মাতলেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা। নবনির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধান জিন্নাতুন খাতুন বলেন, ‘আজকে আমরা বোর্ড গঠন করলাম। আমরা ২৩ জন সদস্য ছিলাম। ১৩টি ভোট পেয়েছি। কিন্তু একটা ভোট বাতিল হয়েছে। তৃণমূলেরও একটা ভোট বাতিল হয়েছে। সিপিএম, বিজেপি সমর্থন করেছে আমাকে। আমাদের লক্ষ্য উন্নয়ন। বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএম মিলে মানুষের উন্নয়নে সামিল হবো।‘
বিজেপির উপপ্রধান ফুল কুমার বর্মন বলেন, ‘উন্নয়নের স্বার্থে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করব। বাম ও কংগ্রেস আমাকে সমর্থন করেছে। তাই বিজেপির ৯ ও জোটের ৪ জন মিলে আজ বোর্ড গঠন করতে পারলাম।‘
বোর্ড গঠনের আগে দলবদলের খেলা অব্যাহত ছিল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শাসকদলের বিরুদ্ধে দল ভাঙানোর অভিযোগ উঠেছে। রায়গঞ্জ ব্লকে এক ব্যতিক্রমী চিত্র আজ চোখে পড়ল। তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি দীপঙ্কর বর্মনের দাবি, এই রামধনু জোটকে বিন্দোলের মানুষ ভালোভাবে মেনে নেয়নি। বাম, কংগ্রেস ও বিজেপি যেভাবে অনৈতিক বোর্ড গঠন করল আগামীতে তার ফল হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারবে। কারণ এই বোর্ড কোনও উন্নয়ন করতে পারবে না।
এদিন বোর্ড গঠনের পর বিজেপি, কংগ্রেস ও বামেরা একসঙ্গে বিজয় মিছিল করে। বিজেপির রায়গঞ্জ ব্লক কনভেনর মানস কুমার ঘোষ বলেন, ‘বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করল বিজেপি সমর্থিত মানুষের জোট।‘ জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসকে ঠেকাতে বিন্দোলের মানুষ জোট বেঁধেছে। এক্ষেত্রে কংগ্রেসের সদস্যাকে পঞ্চায়েত প্রধান করেছে বিজয়ী সদস্যরা। কারণ তৃণমূলের আমলে বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের উন্নয়ন গত পাঁচ বছরে স্তব্দ হয়ে গিয়েছে, শুধু দুর্নীতি করেছে তারা।‘ অন্যদিকে, বীরঘই অঞ্চল এদিন বিজেপির দখলে এসেছে। তবে বাহিন ও গৌড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত দখলে গেছে তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে।