শিলিগুড়ি: রবি ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘ভয় হতে তব অভয় মাঝে, নতুন জনম দাও হে।’ তিস্তার যেন প্রয়োজন নতুন জীবন। দরকার স্বচ্ছ জল। তিস্তার বুকে লুকিয়ে রয়েছে সমূহ বিপদ। যা ভবিষ্যতে দুই পাড় তো বটেই, আশপাশের বাসিন্দাদের ভয়ংকর বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নদী বিশেষজ্ঞরা। বর্ষা আসছে। তাই এখন থেকেই ভয় ধরেছে অনেকের মনে। তিস্তার হাল ফেরাতে কেন্দ্র বা রাজ্য, কোনও সরকারই পদক্ষেপ না করায় আক্ষেপ ঝড়ে পড়ছে।
প্রাকৃতিক বিপর্যয় কতটা পরিবর্তন ঘটাতে পারে, তা পাহাড় তো বটেই এমনকি পুজোর সময় সমতল উত্তরবঙ্গের একটা অংশের মানুষ ইতিমধ্যেই টের পেয়েছেন। সেই ক্ষতচিহ্ন এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকেই। পাহাড় থেকে সমতল, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তিস্তার বুকে শুধুই পলি আর পলি। কোথাও কোথাও পলির পাহাড় জমেছে। জলের সেই নীল রং উধাও। সাধারণত বর্ষার সময় নদীর জল ঘোলাটে হয়ে যায়। কিন্তু বর্ষা শেষে এবং শুখা মরশুমে তিস্তা ফিরে পায় তার আসল রূপ। কিন্তু এখন শুখা মরশুমেও তিস্তার জলে লাগেনি তার চিরাচরিত নীল রং। পলি মিশে ঘোলাটে হয়ে রয়েছে।
গতবছর ৪ অক্টোবর সাউথ লোনাক লেক বিপর্যয়ের জেরে যে পলি জলের সঙ্গে নেমে এসেছে, তা স্বাভাবিক পলি নয়। গুণগত এবং পরিমাণগত ক্ষেত্রে তিস্তার স্বাভাবিক পলির সঙ্গে এই পলির মিল নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক রূপককুমার পালের বক্তব্য, ‘গ্লেসিয়াল লেক বা বরফ হ্রদের নীচে যে পাথর ও কাদা মিশ্রিত আস্তরণ জমাট বেঁধে থাকে, বিপর্যয়ের জেরে তা-ই এসে মিশেছে তিস্তায়। ফলে তার স্বাভাবিক পলির থেকে এখন জলের মধ্যে থাকা পলির ভূতাত্ত্বিক পার্থক্য যথেষ্ট।’
নদী বিশেষজ্ঞ জাতিস্মর ভারতী মনে করেন, ‘দু’পাশের কাদামাটি ও পলি মিশছে জলের সঙ্গে। পাশাপাশি বিভিন্ন বাঁধ থেকে যে জল ছাড়া হচ্ছে, তার সঙ্গেও পলি নেমে আসছে।’ ডুয়ার্সের বিভিন্ন নদী নিয়ে কাজ করা বানারহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকল্যাণ ভট্টাচার্যের মত, ‘শুখা মরশুমেও যখন জল ঘোলাটে, তখন তার কারণ খোঁজা প্রয়োজন।’ এমনটা মনে করেন রূপকও। তাঁর বক্তব্য, ‘লেকটি থেকে এখনও জল বের হচ্ছে কি না বা আলাদা কোনও সাপ্লাই লাইন রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।’
সাউথ লোনাক লেক বিপর্যয়ের প্রায় পাঁচ মাস হতে চলল, কিন্তু এখনও পর্যন্ত নদীবক্ষ থেকে পলি সরানোর কোনও উদ্যোগ নজরে আসেনি। সুকল্যাণ মনে করেন, ‘তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়ায় তার স্বাস্থ্য বজায় রাখতে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজ্ঞানসম্মত পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। না হলে বর্ষার সময় ভয়াবহ বিপদের সামনে পড়তে হবে।’ তবে বর্ষার জল পলি নিয়ে ডাউনস্ট্রিমে নেমে এলেও তেমন ক্ষতি হবে না বলে তিনি আশাবাদী।
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: স্কুলের ভেতর থেকে ৩ বছরের শিশুর মৃতদেহ ( 3 year old…
কোচবিহার: জীবনের প্রথম ইন্টারভিউ। মনের মধ্যে চাপা টেনশন। ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার আগের মুহূর্তে বারবার ইন্টারনেট…
রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: বাঁধ সংস্কারের জন্য তিস্তা ক্যানালের (Teesta canal) জল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: সাধারণের জন্য খুলেছে কেদারনাথ ও বদ্রীনাথের দরজা। মন্দিরের দরজা খুলতেই ঢল…
শিলিগুড়ি: উন্নয়নের রাস্তায় বলি হচ্ছে গাছ। গত এক বছরে শিলিগুড়ি শহরে কোপ পড়েছে অন্তত ৫০০…
শুভঙ্কর মুখোপাধ্যায় বনধোয়ানির জঙ্গলে জন্মদোষে শাস্তিপ্রাপ্ত শিশুটিকে কোলে নিয়ে, চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে কমলকুমার মজুমদারের…
This website uses cookies.