Thursday, May 2, 2024
HomeMust-Read Newsশুখা মরশুমেও তিস্তার জল ঘোলাটে, বর্ষায় বিপর্যয়ের শঙ্কা নদী বিশেষজ্ঞদের

শুখা মরশুমেও তিস্তার জল ঘোলাটে, বর্ষায় বিপর্যয়ের শঙ্কা নদী বিশেষজ্ঞদের

শিলিগুড়ি: রবি ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘ভয় হতে তব অভয় মাঝে, নতুন জনম দাও হে।’ তিস্তার যেন প্রয়োজন নতুন জীবন। দরকার স্বচ্ছ জল। তিস্তার বুকে লুকিয়ে রয়েছে সমূহ বিপদ। যা ভবিষ্যতে দুই পাড় তো বটেই, আশপাশের বাসিন্দাদের ভয়ংকর বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নদী বিশেষজ্ঞরা। বর্ষা আসছে। তাই এখন থেকেই ভয় ধরেছে অনেকের মনে। তিস্তার হাল ফেরাতে কেন্দ্র বা রাজ্য, কোনও সরকারই পদক্ষেপ না করায় আক্ষেপ ঝড়ে পড়ছে।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় কতটা পরিবর্তন ঘটাতে পারে, তা পাহাড় তো বটেই এমনকি পুজোর সময় সমতল উত্তরবঙ্গের একটা অংশের মানুষ ইতিমধ্যেই টের পেয়েছেন। সেই ক্ষতচিহ্ন এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকেই। পাহাড় থেকে সমতল, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তিস্তার বুকে শুধুই পলি আর পলি। কোথাও কোথাও পলির পাহাড় জমেছে। জলের সেই নীল রং উধাও। সাধারণত বর্ষার সময় নদীর জল ঘোলাটে হয়ে যায়। কিন্তু বর্ষা শেষে এবং শুখা মরশুমে তিস্তা ফিরে পায় তার আসল রূপ। কিন্তু এখন শুখা মরশুমেও তিস্তার জলে লাগেনি তার চিরাচরিত নীল রং। পলি মিশে ঘোলাটে হয়ে রয়েছে।

গতবছর ৪ অক্টোবর সাউথ লোনাক লেক বিপর্যয়ের জেরে যে পলি জলের সঙ্গে নেমে এসেছে, তা স্বাভাবিক পলি নয়। গুণগত এবং পরিমাণগত ক্ষেত্রে তিস্তার স্বাভাবিক পলির সঙ্গে এই পলির মিল নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক রূপককুমার পালের বক্তব্য, ‘গ্লেসিয়াল লেক বা বরফ হ্রদের নীচে যে পাথর ও কাদা মিশ্রিত আস্তরণ জমাট বেঁধে থাকে, বিপর্যয়ের জেরে তা-ই এসে মিশেছে তিস্তায়। ফলে তার স্বাভাবিক পলির থেকে এখন জলের মধ্যে থাকা পলির ভূতাত্ত্বিক পার্থক্য যথেষ্ট।’

নদী বিশেষজ্ঞ জাতিস্মর ভারতী মনে করেন, ‘দু’পাশের কাদামাটি ও পলি মিশছে জলের সঙ্গে। পাশাপাশি বিভিন্ন বাঁধ থেকে যে জল ছাড়া হচ্ছে, তার সঙ্গেও পলি নেমে আসছে।’ ডুয়ার্সের বিভিন্ন নদী নিয়ে কাজ করা বানারহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকল্যাণ ভট্টাচার্যের মত, ‘শুখা মরশুমেও যখন জল ঘোলাটে, তখন তার কারণ খোঁজা প্রয়োজন।’ এমনটা মনে করেন রূপকও। তাঁর বক্তব্য, ‘লেকটি থেকে এখনও জল বের হচ্ছে কি না বা আলাদা কোনও সাপ্লাই লাইন রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।’

সাউথ লোনাক লেক বিপর্যয়ের প্রায় পাঁচ মাস হতে চলল, কিন্তু এখনও পর্যন্ত নদীবক্ষ থেকে পলি সরানোর কোনও উদ্যোগ নজরে আসেনি। সুকল্যাণ মনে করেন, ‘তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়ায় তার স্বাস্থ্য বজায় রাখতে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজ্ঞানসম্মত পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। না হলে বর্ষার সময় ভয়াবহ বিপদের সামনে পড়তে হবে।’ তবে বর্ষার জল পলি নিয়ে ডাউনস্ট্রিমে নেমে এলেও তেমন ক্ষতি হবে না বলে তিনি আশাবাদী।

Sucharita Chanda
Sucharita Chandahttps://uttarbangasambad.com/
Sucharita Chanda is working as Sub Editor Since 2020. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad. She is involved in Copy Editing, Uploading in website and various social media platforms.
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
- Advertisment -spot_img

LATEST POSTS

Alipurduar | সর্বদলীয় বৈঠকে মিটল সমস্যা, বিয়ের দাবি থেকে সরলেন তরুণী

0
সুভাষ বর্মন, পলাশবাড়ি: এক মাসে একাধিকবার ধর্নার ঘটনায় ইতি। আলিপুরদুয়ার-১ (Alipurduar) ব্লকের পলাশবাড়ির এক তরুণ-তরুণীর প্রণয়ের সম্পর্ক নিয়ে ব্যাপক চর্চা হয়। একাধিকবার বিয়ের দাবিতে...

গৃহবধূর অশ্লীল ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল, ফাঁদে পা দিয়ে গ্রেপ্তার ফেসবুক বন্ধু

0
বারবিশা: ফেসবুকে প্রথম পরিচয়। এরপর মোবাইল ফোনে ভিডিও কলিং। আর এই ভিডিও কলিংয়ে সাড়া দিয়ে রীতিমতো বিপাকে পড়েছেন বারবিশা পুলিশ ফাঁড়ি এলাকার এক গৃহবধূ।...

Gujarat | অনলাইনে আসা পার্সেল খুলতেই বিস্ফোরণ, যা হল তারপর…

0
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: অনলাইনে অর্ডার দেওয়া পার্সেল খুলতেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ (parcel exploded)। মৃত্যু হল বাবা ও মেয়ের। জখম মৃত ব্যক্তির আরও দুই মেয়ে।...

বন্ধ সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ভেসে আসছে গোঙানির শব্দ! দরজা খুলতেই……

0
ফালাকাটা: সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রের দরজা বন্ধ। তবে তার মধ্য থেকেই পাওয়া যাচ্ছে গোঙানির আওয়াজ। তাহলে কি ভেতরে কোনও রোগী আটকে পড়ে রয়েছেন? এই নিয়ে মঙ্গলবার সকালে...

Gangarampur | সম্প্রীতির নিদর্শন, বখতিয়ার খিলজির মাজারে ভিড় হিন্দু-মুসলিমদের

0
গঙ্গারামপুর: জমজমাট সম্প্রীতির মেলা। বখতিয়ার খিলজির মাজারে পুজো দিলেন হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। প্রতিবছর বৈশাখ মাসের বৃহস্পতিবার বখতিয়ার খিলজি মাজারে হিন্দু ও মুসলিম...

Most Popular