ভাস্কর শর্মা, আলিপুরদুয়ার: এবারের একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা(Students) প্রথম নতুন সিলেবাস এবং সিমেস্টার প্রথায় পরীক্ষা দেবে। খোদ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, তাদের প্রথম সিমেস্টার হবে সেপ্টেম্বর মাসে। সংসদের এই ঘোষণায় যেন বিপাকে পড়েছে সদ্য একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীরা। নতুন সিলেবাসের কোনও বই, মডেল প্রশ্ন কিছুই এখনও তাদের হাতে আসেনি। এই অবস্থায় হাতে রয়েছে মাত্র চার মাস। কী করে প্রথম সিমেস্টার হবে তা নিয়েই এখন চিন্তিত তারা। পড়ুয়াদের পাশাপাশি অভিভাবক এবং শিক্ষকরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন।
যদিও পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের কিছুটা আশ্বস্ত করেছেন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। সংসদ সভাপতির কথায়, ‘নতুন সিলেবাসের বই ও অন্যান্য সহায়ক সরঞ্জাম পেতে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে বুঝতে পারছি। নতুন কিছু চালু করতে গেলে এই সাময়িক সমস্যা আমরা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারব বলে আশাবাদী। তাই ইতিমধ্যেই একাদশ শ্রেণির প্রথম ভাষার প্রথম পত্রের বই সব রেডি হয়ে গিয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পড়ুয়ারা হাতে পাবে। এছাড়াও ৩৮টি টেক্সট বই কাউন্সিল থেকে অনুমোদন করে দিয়েছি। বাকিগুলির কাজও চলছে।’
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি দ্রুত বইয়ের ব্যবস্থার কথা বললেও পড়ুয়ারা কিন্তু কিছুটা হলেও উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীরা ধারণাহীন সিলেবাস নিয়ে আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অন্যতম এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম কোচবিহার রামভোলা হাইস্কুলের ছাত্র চন্দ্রচূড় সেন। তার কথায়, ‘প্রথম নতুন সিলেবাস ও সিমেস্টার সিস্টেমে আমরা পরীক্ষা দেব। তাই আগে পাঠ্যপুস্তক হাতে পেলে ভালো হত। এছাড়াও মডেল প্রশ্নপত্র থাকলে প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হয়।’ চন্দ্রচূড়ের সুরেই সুর মিলেয়েছে এবার মাধ্যমিকে ফালাকাটা ব্লকে প্রথম পারিজাত বল। তার কথায়, ‘পাঠ্যপুস্তক খুঁটিয়ে না পড়লে সিমেস্টার পরীক্ষায় এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর করা সম্ভব হবে না। চার মাস বাদেই প্রথম সিমেস্টার। তাই অন্তত এ মাসে সব বই হাতে পেলে ভালো হয়।’ চন্দ্রচূড়-পারিজাতের মতো সদ্য একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া প্রায় বেশিরভাগ পড়ুয়ার বক্তব্য একই।
আলিপুরদুয়ার-ফালাকাটার বই বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তাঁরা এখনও একাদশ শ্রেণির বই নিয়ে তেমন আশার কথা শোনেননি। ফালাকাটার বই বিক্রেতা কানাই সাহার কথায়, ‘পুরোনো সিলেবাস হলে এতদিন বই কিনতে পড়ুয়াদের ভিড় লেগে যেত দোকানে। কিন্তু নতুন সিলেবাস বলে অনেক পড়ুয়াই খোঁজখবর নিচ্ছে। কিন্তু আমরা কলকাতা থেকে পাইকারি দরে বই আনলেও সেখান থেকে এখনও কিছু জানতে পারিনি।’
ফালাকাটা পারঙ্গেরপার শিশুকল্যাণ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ডাঃ প্রবীর রায়চৌধুরী বলেন, ‘সরকারের উদ্যোগ ভালো। তবে আগে বাজারে বই পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা দরকার ছিল।’
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর, সংশোধিত প্রায় ৬২টি পাঠ্যবই বাজারে আসার কথা। কিন্তু এর মধ্যে একটি বইও এখনও বাজারে আসেনি। সংসদ সূত্রে খবর, ৩৮টি পাঠ্যবই অনুমোদন করা হয়েছে। কিন্তু ওই ৩৮টি বই আদৌ এখন ছাপা হচ্ছে কি না তা স্পষ্ট জানা যায়নি।