উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ যাদবপুরকাণ্ডে স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মৃত্যুকে পকসো আইনের অধীনে আনার দাবিতে সরব হল পশ্চিমবঙ্গের শিশু সুরক্ষা কমিশন। রবিবার নদিয়ায় স্বপ্নদীপের বাড়িতে যান শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘক্ষন ধরে কথা বলেন তিনি। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, স্বপ্নদীপের ১৮ বছর বয়স হয়নি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর ৯ মাস ৯ দিন। এই ঘটনা পকসো আইনের অধীনে পড়ে। তাই পকসো আইনেই বিচার হওয়া উচিৎ বলে দাবি করেছেন অনন্যা।
স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় শিশু সরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। এদিন তিনি বলেছেন, ‘‘ছেলেটিকে উলঙ্গ অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। ওর দেহে সিগারেটের ছ্যাঁকা ছিল। ও নিজেও ফোন করে ভাইকে জানিয়েছিল, ওকে সমকামী বলা হচ্ছে। তাই এটি যৌন নির্যাতনের পর্যায়ে পড়ে। ছেলেটির ১৮ বছর হয়নি। তাই পকসো আইনের অধীনে এই ঘটনার বিচার প্রয়োজন।’’ সেই সঙ্গে তিনি নাবালক হওয়ায় স্বপ্নদীপের নাম আর উল্লেখ না করার জন্য অনুরোধ করেছেন অনন্যা।
এদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বেশ কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন অনন্যা। অনন্যার প্রশ্ন, ‘‘যাদবপুর কি অন্য কোনও গ্রহ? দেশের আর পাঁচটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নিয়ম আছে, এখানে তা মানা হবে না কেন? কেন ক্যাম্পাসে, হস্টেলে সিসি ক্যামেরা থাকবে না?’’ তিনি জানান, ‘‘আমরা যখন সিসিটিভি বসাতে বলেছিলাম, ওখানকার এক অধ্যাপক ফুটপাতে ক্লাস নিতে শুরু করেন। ওখানে সিনিয়র এবং প্রাক্তনীদের দাদাগিরি চলে। কেউ তাঁদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পান না। এর আগে প্রাক্তন উপাচার্য সুরঞ্জন দাসও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু অধ্যাপক এবং পড়ুয়ারা এর বিরোধিতা করেছিলেন। তাই আজকের ঘটনায় কেউ দায় এড়াতে পারেন না। সিসিটিভি থাকলে আমরা জানতে পারতাম হস্টেলে কী হয়েছিল। সকলের হাতেই রক্তের দাগ লেগে আছে। সকলেই আমাদের আতশকাচের নীচে। আমরা পৃথক ভাবে ঘটনার তদন্ত করছি।’’
স্বপ্নদীপের মৃত্যুর তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে রিপোর্ট চেয়ে শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে চিঠি দিয়েছে শিশু সুরক্ষা কমিশন। অনন্যা জানিয়েছেন, যে হেতু যাদবপুরে এই মুহূর্তে স্থায়ী উপাচার্য নেই, তাই আচার্য হিসাবে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। কমিশনের চিঠি গিয়েছে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের কাছেও।