উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ফের বিতর্কে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পোলিং বুথে থাকছে না কেন্দ্রীয় বাহিনী। কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায় কোথায় কী কী পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা হবে এমনই এক নির্দেশিকা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। আর এই নির্দেশিকা প্রকাশের পরই ফের শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা।
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই জেলায় জেলায় বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটছে। বোমাবাজি থেকে গোলাগুলি কিছুই বাদ যায়নি। রক্ত ঝরেছে, প্রাণ গেছে ৮ জনের। সেই নিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। সুষ্ঠু ও অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি জানানো হয়। তারপরই হাইকোর্ট, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করানোর নির্দেশ দেয়। হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে টালবাহান করে কমিশন। প্রথমে ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইলেও পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে আরও ৮০০ কোম্পানি চাইতে বাধ্য হয় কমিশন। সেই মতো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে বাহিনী চায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেই বাহিনীর ব্যবহার করা নিয়ে ধোঁয়াশা যেন থেকেই গেল। যদিও কেন্দ্রের তরফে আপাতত ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী মিলেছে।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের চিঠি পাঠায় নির্বাচন কমিশন। সেখানে ৩১৫ কোম্পানি বাহিনীকে কোন কোন কাজে ব্যবহার করা হবে, সেই ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে নাকা চেকিং, এরিয়া ডমিনেশন, রাজ্য ও আন্তর্জাতিক সীমান্তে টহলদারি, রুট মার্চ ইত্যাদি কাজ করবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। যে কোনওরকম রাজনৈতিক হিংসার ঘটনার মোকাবিলা করতেও ব্যবহার করা হবে বাহিনীকে। কিন্তু কোথায় কোথায় বাহিনী ব্যবহার হবে, তার নির্দেশ দেবে সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসন। আর এই নির্দেশিকা আসতেই ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। কারণ কমিশনের নির্দেশে কোথাও বলা হয়নি যে, পোলিং বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করা হবে। যদিও হাইকোর্ট তার নির্দেশে বিষয়টি উল্লেখ করেছিল। কিন্তু তারপরেও কমিশন এখনও পর্যন্ত সেব্যাপারে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি।
হাইকোর্ট তার নির্দেশে বলেছিল, রাজ্যের সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। স্পর্শকাতর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে কিনা সেই প্রশ্নে কমিশনার রাজীব সিনহা বলেন, ‘স্পর্শকাতর এলাকাতে বেশি ফোকাস করতে বলা হয়েছে।’ যদিও এখনও নির্বাচনের অনেক সময় বাকি আছে, তাই কমিশন এ ব্যাপারে চুড়ান্ত কী সিদ্ধান্ত নেবে তা পরেই জানা যাবে।
উল্লেখ্য, হাইকোর্টের নির্দেশে পরই কেন্দ্রের কাছে ৮০০ কোম্পানি বাহিনী চেয়ে পাঠিয়েছিল কমিশন। কমিশনের এই চিঠির উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানায়, তারা ৩১৫ কোম্পানি পাঠাতে পারবে। সেই মোতাবেক বাহিনীও এসে পৌছচ্ছে রাজ্যে। কিন্তু বাকি ৪৮৫ বাহিনী কবে আসবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। চলছে চিঠি-চাপাটি। তারমধ্যেই বাহিনী নিয়ে কমিশনের এই নির্দেশ নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।