ময়নাগুড়ি: ডুয়ার্সের (Dooars) বিভিন্ন শহরে বহুরূপী সেজে পথে পথে ঘুরে বেড়ান রাজু শ্রীবাস্তব। উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) বাসিন্দা রাজু বংশপরম্পরায় এভাবেই রুটি রুজির পথ বেছে নিয়েছেন। পেশার টানে প্রতিদিন এক শহর থেকে ছুটে যান অন্য শহরে। রাস্তায় লোকের ভিড়েই মাঝেই কোথাও বসে নির্বিঘ্নে সেজে নেন। নিজের মেকআপ (Make up) করেন নিজেই। পুরোটাই করেন নিজের হাতে। সাজতে সাজতেই চলে ডায়লগ আওড়ানো। অভিনয়ও করেন খুব ভালো। দিনের শেষে মেরেকেটে আয় হয় ৩০০ টাকা। কখনও বা ৪০০ টাকা। এই রোজগারেই চালাতে হয় সংসার।
শুক্রবার সকালে রাজু শ্রীবাস্তবের দেখা মিলল ময়নাগুড়ি বাজারে। এদিন মজনুর বেশে ছিলেন তিনি। সাজগোজ নিয়ে রাজু তখন খুব ব্যস্ত। পাশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সাজ পোশাকের নানান সরঞ্জাম। এর মাঝেই জুড়লেন গল্প। নিজের জীবন, পেশা এবং পরিবারের (Family) গল্প বললেন একনাগাড়ে। আলোচনা শেষ হতেই হিন্দি সিনেমার সুপারস্টারের মতো আউড়ে দিলেন লায়লা মজনুর বিখ্যাত ডায়লগ।
রাজু ধূপগুড়ির মহাকালপাড়ায় প্রায় তিরিশ বছর ধরে বাড়ি ভাড়া করে থাকেন। সঙ্গে থাকেন স্ত্রী কাসাদেবী। তাঁদের কোনও সন্তান নেই। শৈশবে ঠাকুরদা রামপ্রসাদ শ্রীবাস্তবের হাত ধরে এই শহরে প্রথম এসেছিলেন তিনি। তারপর বাবা পান্নালাল শ্রীবাস্তবের হাত ধরেই সরাসরি রোজগারের ময়দানে নেমে পড়া। তাঁরা আজ কেউই আর বেঁচে নেই। তবে রাজুর মাধ্যমে বেঁচে আছে তাঁদের পূর্বপুরুষের এই পেশা (Occupation)।
কত ধরণের সাজ, কত ধরণের অভিনয় (Acting) যে জানেন, তার কোন ইয়ত্তা নেই। অসাধারণ দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তোলেন একেকটি চরিত্র। সঙ্গে স্মৃতি শক্তিও প্রখর। জোকার খুব প্রিয় চরিত্র রাজুর। একবার নাকি কুলি সেজে ময়নাগুড়িতে অমিতাভ বচ্চনের সাজে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। প্রচুর টাকা রোজগার (Earn) হয়েছিল সেবার। অচিরেই হয়ে উঠেছিলেন সবার প্রিয়। এভাবেই ‘বহুরূপী’ হয়ে জীবনের বাকি দিন দিতে চান রাজু শ্রীবাস্তব।