পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি : পুজোর আগে বাড়ল বনভ্রমণের খরচ। শুধু এন্ট্রি ফি-ই নয়, বাড়ানো হয়েছে বিভিন্ন সাফারি ও গাইডের খরচও। ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যটকদের জন্য খুলে যাচ্ছে জঙ্গল। সেদিন থেকেই নতুন খরচ কার্যকর হবে। একইসঙ্গে গরুমারার জঙ্গলে পুনরায় হাতি সাফারি চালু হতে চলেছে। ফলে পুজোর মরশুমে সেখানে পর্যটকদের ভিড় বাড়বে বলেই আশা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে, বাড়তি খরচ নিয়ে আশঙ্কাও রয়েছে তাঁদের মনে।
গত সোমবার বন দপ্তরের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এবার থেকে সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানে প্রবেশের জন্য জনপ্রতি গুনতে হবে ২০০ টাকা। নেওড়াভ্যালি, গরুমারা, চাপড়ামারি, জলদাপাড়াতেও ঢোকার জন্য একই ফি প্রযোজ্য। বক্সা টাইগার রিজার্ভ ও মহানন্দা অভয়ারণ্যে জনপ্রতি দিতে হবে ১৫০ টাকা। দার্জিলিংয়ের সেঞ্চল অভয়ারণ্যের টাইগার হিলে পর্যটকদের ঢোকার জন্য ৫০ টাকা এবং টাইগার হিল বাদে বাকি অংশে জনপ্রতি ১৫০ টাকা করে নেবে বন দপ্তর। রায়গঞ্জ অভয়ারণ্যে প্রবেশের জন্য জনপ্রতি দিতে হবে ১২০ টাকা।
জলদাপাড়ায় হাতি সাফারি নিয়মিত চালু ছিল। গতবার এখানে হাতি সাফারির জন্য পর্যটক পিছু দিতে হত ৯০০ টাকা। এবার সেই খরচ বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। গরুমারায় গত বছর হাতি সাফারি হয়নি। এবার জলদাপাড়া থেকে দুটি কুনকি হাতি আনা হয়েছে গরুমারায়। আগে সেখানে হাতি সাফারির খরচ ছিল জনপ্রতি ১ হাজার ২০ টাকা। এবার তা বেড়ে হয়েছে ১২০০ টাকা।
দার্জিলিংয়ের সেঞ্চল থেকে জলদাপাড়া, গরুমারা এবং বক্সা টাইগার রিজার্ভে গাইড চার্জ গতবার ছিল ৩০০ টাকা। এবার তা বাড়িয়ে ৩৫০ টাকা করা হয়েছে। এর বাইরে নেওড়াভ্যালি, সিঙ্গালিলা ও মহানন্দায় ছয়জনের ট্রেকিং দলের জন্য গাইড নিলে দিনপ্রতি ১২০০ টাকা করে নেবে বন দপ্তর।
বন্যপ্রাণ বিভাগের উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখর বলছেন, ‘হাতি সাফারির খরচ সামান্য বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন খরচই বাড়ছে। আসলে হাতির খাবারের দাম, মাহুতের খরচ বেড়েছে। আনুষঙ্গিক আরও অনেক খরচ বেড়েছে। যে কারণে বন দপ্তর খরচ বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। তবে যে সমস্ত সংরক্ষিত বনাঞ্চলে পর্যটকদের ভিড় বেশি, সেখানে খরচ খুব সামান্যই বেড়েছে।’
পর্যটকরা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে জঙ্গল সাফারি করলে তার জন্য বন দপ্তরের চিহ্নিত জিপ ভাড়া নিতে হত। আগে সেই ভাড়া ১৫০০ টাকা নেওয়া হত ৬ জনের জন্য। এবার নতুন নির্দেশে জিপভাড়ার উল্লেখ নেই। তবে, জিপভাড়ার বাইরে বাড়তি হিসেবে জঙ্গলে প্রবেশের জন্য জিপপ্রতি আরও ৪০০ টাকা নেওয়া হত। এবার থেকে এই ৪০০ টাকা নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন রাজেন্দ্র জাখর।
ডুয়ার্স টুরিজম ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সভাপতি দিব্যেন্দু দেব বলছেন, ‘আগে জঙ্গলে এন্ট্রি ফি দিনে ১৩০ টাকা ও বিকেলে ১৮০ টাকা নেওয়া হত। ফলে ২০০ টাকা হলে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না।’ তাঁর মতে, জিপের জন্য ভাড়ার বাইরে বাড়তি যে ৪০০ টাকা নেওয়া হচ্ছিল, সেটা সত্যিই মকুব হলে সাফারিতে আগ্রহ বাড়বে পর্যটকদের।