বর্ধমানঃ পরম শিক্ষক বাবা ও মা। তাই শিক্ষক দিবসের দিনে বাবা ও মায়ের পা ধুইয়ে দিল আউশগ্রামের কয়রাপুর বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠের ছাত্র-ছাত্রীরা। এভাবেই স্কুলে শিক্ষক দিবস পালন করা হল। শুধু তাই নয়, স্কুলের দুই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকেরও পা ধুইয়ে দিলেন ওই স্কুলের দুই প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী। তাঁরাও এখন ওই স্কুলেরই শিক্ষক ও শিক্ষিকা পদে রয়েছেন৷ জল দিয়ে পা ধুইয়ে তাঁরা প্রনাম জানান।
কয়রাপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সতীনাথ গোস্বামী বলেন, এখনকার দিনে অর্থ থাকলেও শ্রদ্ধা বিষয়টা উঠে গিয়েছে। আর বাবা ও মা হচ্ছে প্রথম শিক্ষক। অথচ সেই বাবা ও মাকে যদি শ্রদ্ধা না করা হয় তাহলে আগামী দিনে ছাত্র-ছাত্রীরা কি শিখবে। সেই কারনেই আমাদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে সেই শিক্ষা পায় আমরা সেটাই চেষ্টা করেছি।
জানা গিয়েছে, আউশগ্রাম -১ ব্লকের কয়রাপুর বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ স্কুলে বর্তমানে প্রায় ৩৫০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে ১৩ জন শিক্ষক পড়ান। এদের মধ্যে আবার তিনজন পার্শ্ব শিক্ষক হিসাবে পড়ান৷ এদিন স্কুলে শিক্ষক দিবসের আয়োজন করা হয়৷ সেখানেই পডুয়াদের অভিভাবকদের চেয়ারে বসানো হয়৷ তারপর তাঁদের পা জলে ধুইয়ে প্রনাম জানানো হয়৷ ওই স্কুলেই এক সময়ে শিক্ষকতা করেছিলেন অসিতকুমার প্রামানিক ও মনোরঞ্জন দে। এদিন তাঁদের পা ধুইয়ে দেন কয়রাপুর স্কুলের শিক্ষক কাঞ্চনকুমার দে ও শিক্ষিকা সালেহা খাতুন৷ কাঞ্চন বাবু বলেন, ‘আমি নিজে কয়রাপুর স্কুলের ছাত্র ছিলাম একসময়ে। তাই আমাদের সময়ে যে শিক্ষকরা ছিলেন আমরা তাঁদের পা ধুইয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছি৷’
অভিভাবকদের প্রতি এমন শ্রদ্ধা নিবেদন করায় তাঁরা আপ্লুত হয়েছেন। অভিভাবকরা বলেন, ‘ছেলে মেয়েকে স্কুলে লেখাপড়া শিখতেই পাঠাই নি৷ সেইসঙ্গে আচার আচরণ শিক্ষা নিতে পাঠিয়েছি। স্কুল আমাদের ছেলে মেয়েদের ভালো শিক্ষা দিয়েছে দেখে খুবই আনন্দিত হলাম৷’ এদিন আরেক শিক্ষক বলেন, ‘আমাদের সময়ে শিক্ষকরা রাস্তা দিয়ে কোথাও গেলে ছাত্ররা সাইকেল থেকে নেমে প্রনাম করত। এখন প্রায় দেখাই যায় না৷ তাই স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের এমন শিক্ষা দিতে পেরে আমাদের খুব ভালো লাগছে।’