Sunday, May 19, 2024
HomeTop Newsটাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়েই করুণ পরিণতি! কী ঘটেছিল টাইটানে?

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়েই করুণ পরিণতি! কী ঘটেছিল টাইটানে?

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে করুণ পরিনতি হল সাবমেরিন টাইটানের। আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কাছেই মিলল টাইটানের ধংসাবশেষ। বলা হচ্ছে, মহাসাগরের তলদেশে বিপর্যয়কর অন্তর্মুখী বিস্ফোরণে সাবমেরিনটি ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে গেছে। গত রবিবার আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল টাইটান। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তলদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে সাবমেরিনটির যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারপর থেকেই শুরু হয় টাইটানের খোঁজ। টানা চারদিন ধরে চলে তল্লাশি। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার অনুসন্ধানকারী দল আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের আশপাশে টাইটানের কিছু ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা জানায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনায় যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের দেহ উদ্ধার হওয়ার সম্ভাবনা কম। এ দুর্ঘটনার সময় টাইটানের অবস্থান কোথায় ছিল, সমুদ্রের কতটা গভীরে ছিল, তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।

এখন মার্কিন নৌবাহিনী বলছে, টাইটান যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হওয়ার পরপরই মহাসাগরের তলদেশে বিপর্যয়কর অন্তর্মুখী বিস্ফোরণে সাবমেরিনটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। অনুসন্ধানকারীরা এখনও টাইটানের আরও ধ্বংসাবশেষের খোঁজে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ঠিক কখন ঘটনাটি ঘটল, ঠিক কী হয়েছিল, আর কেনইবা হয়েছিল—এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা রয়ে গেছে। টাইটানের আরোহীদের এখনও খোঁজ মেলেনি। আটলান্টিকের তলদেশে সাবমেরিন টাইটান কী কারণে ধ্বংস হলো, তা জানতে খতিয়ে দেখা হবে এর ধ্বংসাবশেষগুলো। মেলানোর চেষ্টা করা হবে অনেক হিসাব।

টাইটানের ধ্বংসাবশেষ দেখে মনে হয়েছে, সাগরের তলদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর পর কোনো এক সময় সাবমেরিনটিতে ছিদ্র বা ফাটল দেখা দিয়েছিল। সাবমেরিনটি তখন জলের এতটাই গভীরে ছিল যে এর ওপরের জলের ওজন ছিল কয়েক হাজার টন। বলা চলে পুরো আইফেল টাওয়ারের ওজনের সমান। টাইটানের বাইরের আবরণের ভেতরে সুরক্ষিত ছিলেন অভিযাত্রীরা। তবে এতে কোনো ফাটল দেখা দিলে তা বাইরের পানির চাপে দুমড়েমুচড়ে যাওয়ার কথা। তাহলে কীভাবে টাইটানে বিস্ফোরণ হলো, আর তা ঠেকাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যেত,  তা বের করতে তদন্তকারীরা সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষগুলো একসঙ্গে করবেন বলে মনে করেন যুক্তরাজ্যের নৌবাহিনীর সাবমেরিন চালক রেয়ান রামসে। রেয়ান রামসে বলেন, সাবমেরিনটিতে উড়োজাহাজের মতো কোনো ব্ল্যাক বক্স ছিল না। তাই শেষ মুহূর্তে সেটিতে কী হয়েছিল, তা জানা যাবে না। এ ছাড়া তদন্তের অন্য প্রক্রিয়াগুলো একটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার তদন্তের চেয়ে আলাদা হবে না।

টাইটানের মালিক ওশানগেটের ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে, সাবমেরিনটির বহিরাবরণের অবস্থা সব সময় পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা ছিল। ফলে সাবমেরিনটি জলের গভীরে যাওয়ার সময় বহিরাবরণের ওপর কী প্রভাব পড়ছে তা দেখা যেত। কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা–ও জানিয়ে দিত ওই পর্যবেক্ষণব্যবস্থা। তাহলে কি টাইটানে পূর্বসতর্কতা প্রযুক্তি কাজ করেনি? এটি যদি কাজ করত, তাহলে সাবমেরিনটির চালক দুর্ঘটনার আভাস আগে থেকেই পেতেন এবং সেটিকে সাগরপৃষ্ঠে উঠিয়ে নিতেন। সাবমেরিনটির বহিরাবরণে কোনো সমস্যা হলে, কেন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা কাজ করেনি তা বের করার চেষ্টা করবেন তদন্তকারীরা। টাইটানের ধ্বংসাবশেষগুলো সংগ্রহ করার পর সেগুলো পরীক্ষা করে দেখবেন তদন্তকারীরা। প্রতিটি ধ্বংসাবশেষ অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে রেখে যাচাই করা হবে। খুঁজে দেখা হবে ঠিক কোথায় ফাটল দেখা দিয়েছিল। তাদের আরও দাবি, টাইটান পরীক্ষামূলক যান। আর সাবমেরিনটি এতটাই উদ্ভাবনী ছিল যে অনুমোদনের জন্য প্রচলিত মানগুলো এটির উপযুক্ত নয়।

তদন্তকারীরা আরও একটি বিষয় খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে। সেটি হল, প্রতিবার টাইটান সাগরের গভীরে যাওয়ার পর জলের চাপে সংকুচিত হতো। ওপরে উঠে এলে সেটি স্বাভাবিক আকৃতিতে ফিরে আসত। বারবার এমনটি হওয়ায় সাবমেরিনটির কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। বিষয়টি নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখা হতো কি না, তা স্পষ্ট নয়।

টাইটান ধ্বংসের ঘটনা কারা তদন্ত করবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাউগারের মতে, কারা তদন্ত করবে তা নির্ধারণ করাটা জটিল। কারণ, ঘটনাটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় ঘটেছে। আর সেটির তল্লাশিতে অনেক দেশ জড়িত ছিল। তবে টাইটান নিখোঁজের পর থেকে তল্লাশির কাজে মূল ভূমিকা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড। তাই ধরে নেওয়া যায়, তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই বাহিনী।

তবে ১৯১২ সালে ডুবে যাওয়া টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৩ হাজার ফুট গভীরে রয়েছে। আর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তলদেশের উদ্দেশে যাত্রার ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের মাথায় নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয় সাবমেরিনটির।

Sandip Sarkar
Sandip Sarkarhttps://uttarbangasambad.com/
Sandip Sarkar Reporter based in Darjeeling district of West bengal. He Worked in Various media houses for the last 22 years, presently working in Uttarbanga Sambad as Sr Sub Editor.
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
- Advertisment -spot_img

LATEST POSTS

IPL | ধোনির চেন্নাইকে হারিয়ে আইপিএলের চতুর্থ দল হিসাবে শেষ চারে বেঙ্গালুরু

0
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: আইপিএলের চতুর্থ দল হিসাবে প্লে অফে উঠল বেঙ্গালুরু। বেঙ্গালুরু বনাম চেন্নাইয়ের  গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে টসে জিতে বল করার সিদ্ধান্ত নেন...

Siliguri | তিস্তায় জলস্তর বেড়ে আটক ২, উদ্ধারে শুরু তৎপরতা

0
শিলিগুড়ি: পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টির জেরে তিস্তার জলস্তর হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় বিপত্তি ঘটলো রংপোতে। নদীতে আটকে পড়লেন দু'জন। তবে তাঁরা স্থানীয় না পর্যটক তা স্পষ্ট...

Patiram | ঘুমের মধ্যেই বেহুঁশ করে চুরি, যাওয়ার আগে আইসক্রিম খেলো চোরের দল

0
পতিরাম: এ যেন ফিল্মি কায়দায় চুরি। পরিবারকে গ্যাস স্প্রে করে অচৈতন্য করে বাড়ির সর্বস্ব চুরি করল চোরের দল। যাওয়ার আগে খেয়ে গেল আইসক্রিম। নগদ...

Bomb Recovered | বিস্ফোরণের পর ফের উদ্ধার জারভর্তি বোমা, নিষ্ক্রিয় করল বম্ব স্কোয়াড

0
কালিয়াচক: কালিয়াচকের রাজনগর মডেল গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের পর আরও এক জার বোমা উদ্ধার (Bomb recovered) হল ঘটনাস্থল থেকে। ওই জার থেকে ৯টি প্লাস্টিকের বলবোমা...

Minority Scholarship Scam | স্কলারশিপের টাকা আত্মসাৎ! অভিযুক্ত ২ জনকে হেপাজতে চায় সিআইডি

0
বিশ্বজিৎ সরকার, করণদিঘি: মাইনোরিটি স্কলারশিপের (Minority Scholarship Scam) কোটি কোটি টাকা তছরুপের দায়ে অভিযুক্ত মহম্মদ ফইজুল রহমান ও আবদুস সামাদকে নিজেদের হেপাজতে নিতে চায়...

Most Popular