লাটাগুড়ি: নজরদারির অভাবে গরুমারার জঙ্গলে জ্বালানি কাঠকুড়ানির প্রবেশ বেড়ে চলেছে। স্থানীয়ভাবে তাঁদের ‘লাকড়ি পার্টি’-ও বলা হয়। অভিযোগ, বন লাগোয়া এলাকার কিছু পুরুষ ও মহিলা জ্বালানি কাঠ সংগ্রহের অছিলায় জঙ্গলে প্রবেশ করছেন। কিন্তু তাঁদের কেউ কেউ অবাধে জঙ্গলের ছোট গাছ কেটে ফেলছেন বলে অভিযোগ। এতে যেমন গরুমারার জঙ্গল সংকটে পড়ছে, তেমনই বন্যপ্রাণীর হামলায় প্রাণহানির আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। যদিও বন দপ্তরের আধিকারিকদের বক্তব্য, জঙ্গলে সাধারণের অবাধ প্রবেশ আটকাতে কড়া নজরদারির পাশাপাশি একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মূর্তি থেকে খুনিয়া যাওয়ার রাস্তায় মূর্তি নদীর ওপর নতুন করে সেতু তৈরি করা হচ্ছে। যার ফলে ওই পথে যাতায়াত প্রায় বন্ধ। এর জেরে বন দপ্তরের গরুমারা নর্থ রেঞ্জের নজরদারিতে কিছুটা খামতি পড়েছে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, মূর্তি নদী পেরিয়ে প্রতিদিন কয়েকশো কাঠ কুড়ানি অবাধে জঙ্গলে প্রবেশ করছে। অভিযোগ, ‘লাকড়ি পার্টি’-র পুরুষ-মহিলারা শুধুমাত্র গাছের ডালপালা নয়, নাগালে থাকা জঙ্গলের ছোটখাটো গাছগুলি কেটে ফেলছেন। দিনের পর দিন এমনটা হয়ে আসছে। যার জেরে সংকটে জঙ্গল। চালসার পরিবেশপ্রেমী মানবেন্দ্র দে সরকারের বক্তব্য, ‘দিনের পর দিন এভাবে গাছ কাটা চললেও বন দপ্তরের তরফে তা আটকাতে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এতে একদিকে জঙ্গলের যেমন ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি জঙ্গলে এই অবাধ প্রবেশের জন্য যে কোনও সময় বন্যপ্রাণীর হামলায় মৃত্যুও হতে পারে।’
এর আগে গরুমারা জঙ্গলে কাঠ কুড়োতে ঢুকে হাতির হানায় প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গরুমারার জঙ্গলে কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে এক মহিলার মৃত্যু হয়। আহত হন আরও একজন। তারপর বন দপ্তরের তরফে কড়া নজরদারির বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে ঢিলেঢালা নজরদারির সুযোগে ফের কাঠ কুড়ানিরা অবাধে জঙ্গলে প্রবেশ করছেন বলে অভিযোগ। যদিও গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের নর্থের রেঞ্জ অফিসার নীলাদ্রিকিশোর রায় জানান, ‘লাকড়ি পার্টি’-কে আটকাতে লাগাতার নজরদারি চলছে। এই কাজে বন দপ্তরের পাশাপাশি জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যদেরও সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।