কোচবিহার: ১৫ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী রেজিস্ট্রার নেই। এতদিন ধরে কখনও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার, কখনও ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবার কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আধিকারিক রেজিস্ট্রারের অস্থায়ী দায়িত্ব সামলেছেন। তিন বছরের বেশি সময় সেই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন পমোলজি অ্যান্ড পোস্ট হার্ভেস্ট টেকনলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক প্রদ্যুৎকুমার পাল। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর কার্যকালের মেয়াদ শেষ হবে। তারপর কে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের পদে বসবেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। কারণ স্বাভাবিক নিয়মে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আধিকারিককে দায়িত্ব দিতে পারেন। যেহেতু বর্তমান উপাচার্যের ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্ট সীমিত করে দিয়েছে। তাই উপাচার্য অস্থায়ী রেজিস্ট্রার নিয়োগ করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। ফলে গোটা বিষয়টিকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
অস্থায়ী রেজিস্ট্রারের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ দেবব্রত বসুও। তিনি বলেন, ‘রেজিস্ট্রারের পদ সহ কয়েকটি পদে আধিকারিকদের অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে সরকারি নিয়মনীতি মেনে স্থায়ী পদগুলি পূরণ করা হবে।’
প্রদ্যুতের আগে অবশ্য ডঃ শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় সহ কয়েকজন অধ্যাপক কয়েকবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব সামলেছেন। এতদিন পেরিয়ে গেলেও কেন গুরুত্বপূর্ণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী রেজিস্ট্রার নিয়োগ হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। যদিও গত কয়েক বছরে এক-দু’বার স্থায়ী রেজিস্ট্রার এবং অন্যান্য পদে স্থায়ী আধিকারিক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়েছিল। পরবর্তীতে স্থায়ী পদে নিয়োগের জন্য সেভাবে আর বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি বলে অনেকেই জানিয়েছেন। এদিন ফোন মারফত প্রদ্যুৎ জানিয়েছেন, ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী রেজিস্ট্রার ছিলেন। এরপর যাঁরা এই পদে আসীন ছিলেন, তাঁরা সবাই অস্থায়ী রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব সামলেছেন।
জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রার ডঃ প্রদ্যুৎকুমার পাল ২০২০ সালের ১৮ অগাস্ট অস্থায়ী রেজিস্ট্রারের পদে বসেছেন। এরপর বেশ কয়েকবার তাঁকেই অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রদ্যুৎ বলেন, ‘১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমাকে দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। এরপর আমি বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম বলছে, উপাচার্য তাঁর ক্ষমতাবলে কোনও অধ্যাপক বা আধিকারিককে সর্বোচ্চ ছয় মাসের জন্য অস্থায়ী রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ করতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতিতে অনুমোদন নেওয়া জরুরি। দায়িত্বের মেয়াদ বাড়ানো হলে সেটাও কর্মসমিতির বৈঠকে অনুমোদন করাতে হবে। এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে কর্মসমিতি না থাকায় এ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। সেক্ষেত্রে রেজিস্ট্রারের পদ ফাঁকা থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক, অ্যাকাডেমিক, ডেভেলপমেন্ট কাজ ব্যাহত হবার আশঙ্কা বাড়ছে। সেক্ষেত্রে আগামীতে কী হবে, এখন সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন সকলে।