উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ দুর্নীতির অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে প্রধান উপপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফার নির্দেশ দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ পাওয়া মাত্রই পদত্যাগও করেছিলেন তারা। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাদেরকেই ফের প্রার্থী করল তৃণমূল। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ দলেরই একাংশ। কীভাবে দল থেকে তাঁদের প্রার্থী করা হল, তা নিয়ে দলের অন্দরে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
নবজোয়ার কর্মসূচীর আগে গত ডিসেম্বরে জেলা সফরে বেড়িয়েছিলেন তৃণমূলের সাধারণ সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৩ ডিসেম্বর কাঁথির সভায় যাওয়ার পথে মারিশদার এক গ্রামে ঢুকে পড়েছিলেন তিনি। সেখানে অভিষেককে কাছে পেয়ে প্রধান উপপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। এরপরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মারিশদার প্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল, উপপ্রধান রামকৃষ্ণ মণ্ডল, অঞ্চল সভাপতি গৌতম মিশ্রকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশের পর ৪৮ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই পদত্যাগ করেছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতি পদত্যাগ করেছিলেন। এরপরই তারা দলের প্রতি ক্ষোভ দেখিয়ে তৃণমূলের কর্মসূচী বয়কটের পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাতেও যেতে দেখা যায়নি তাঁদের। দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড তাঁদের ওপর অসন্তুষ্ট থাকায় স্বাভাবিকভাবে এবার তাঁদের প্রার্থী করা হবে না বলেই মনে করছিলেন দলের অনেকেই। দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এবার ঝুনুরানি মণ্ডল এবং গৌতম মিশ্র যথাক্রমে গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। মনোনয়নও জমা দিয়েছেন। যদিও রামকৃষ্ণ মণ্ডল জানিয়েছেন, তাঁকে দল থেকে প্রার্থী হতে বলা হয়েছিল। তবে তিনি রাজি হননি।
তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচীতে ছিল নিজের প্রার্থী নিজে বাছুন। প্রতিটি জায়গাতেই ব্যালট বক্সে ভোট দেওয়ার হিড়িক পড়েছিল দলীয় কর্মীদের মধ্যে। সেক্ষেত্রে মারিশদার দলীয়কর্মীরাও নবজোয়ারে ভোট দিয়েছেন দলের প্রার্থী বাছাই করতে। তবে কি গ্রামবাসীরা অভিষেকের নির্দেশে পদত্যাগ করা প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতিকেই বেছে নিয়েছেন? এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘কী কারণে এরকম হয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখা হবে।’ এই বিষয়টি নিয়ে দলের অন্দরে ইতিমধ্যেই অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করেও অনেকে টিকিট পেয়েছেন। অনেক নেতাই গত ৩১ মে চণ্ডীপুরে পঞ্চায়েতের প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটাভুটিতে উপস্থিত ছিলেন না। সাবাজপুটের ১৯ টি বুথের সভাপতি এবং পদাধিকারীরা উপস্থিত ছিলেন না। তবে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁদের অনেককেই প্রার্থী করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আবার কেউ কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেও জয়লাভ করেছেন। তবে তাঁদের প্রার্থী করা নিয়ে দলের নিচু তলার কর্মীরা অসন্তুষ্ট।