গাজোল: পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনেও ছাপ্পা! তৃণমূলের বিরুদ্ধে দলীয় প্রার্থীকে সভাপতি পদে বসাতে দেদার ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ উঠল গাজোলে। বিডিওর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে বিজেপি।
সোমবার ছিল গাজোল পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন। এই পঞ্চায়েত সমিতিতে মোট আসন ৪৫টি। এর মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ২৪টি, বিজেপি ১৮টি, কংগ্রেস ২টি এবং নির্দল পেয়েছে ১টি আসন। নির্দল তৃণমূলকে সমর্থন করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল বোর্ড গঠন করবে, এটাই ঠিক ছিল। তৃণমূলের তরফে মোজাম্মেল হোসেনের নাম সভাপতি পদে প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু তৃণমূলের অন্দরে রটে যায়, পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি রেজিনা পারভীন বিজেপি ও কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সভাপতি হতে পারেন।
এমন আশঙ্কায় এদিন বোর্ড গঠন চলাকালীন তৃণমূলেরই এক অজ্ঞাত পরিচয় কর্মী তাঁদের দলের ২৪ জন ও এক নির্দল সদস্যের ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়ে তাতে মোজাম্মেল হোসেনের নামে ছাপ দিয়ে তা বিডিওর কাছে জমা করেন। বিজেপির অভিযোগ, বিডিও সহ অন্য সরকারি আধিকারিকদের সামনেই চলে ছাপ্পা। কিন্তু আধিকারিকরা নীরব ছিলেন। এর প্রতিবাদ জানায় বিজেপি ও অন্য বিরোধীরা। ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় বিডিও অফিস চত্বরে।
এরপর বিদ্রোহী মোড়ে ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপির জয়ী সদস্যরা। ঘটনাস্থলে দেখা যায় কংগ্রেসের সদস্যদেরও। যদিও সরাসরি তাঁরা পথ অবরোধে শামিল হননি। অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কের দুই দিকে গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী সহ সাধারণ মানুষ। পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর অবরোধ উঠে যায়।
বিজেপি নেত্রী গাঙ্গুলী সরকার মণ্ডল বলেন, ‘তৃণমূলের এক নেতা ২৫টি ব্যালট সংগ্রহ করে নিজেই ছাপ্পা দিতে শুরু করেন। ঘটনার প্রতিবাদ করলে আমাদের উপর চড়াও হন তৃণমূলের বেশ কিছু সদস্য।’ বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের এই অনৈতিক কাজে মদত রয়েছে বিডিও সহ অন্য আধিকারিকদের। দলের তরফে এর বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলনে নামা হবে।
যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি দীনেশ টুডু বলেন, ‘পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের জন্য আমাদের হাতে ম্যাজিক ফিগার ছিল। ৪৫টি আসনের মধ্যে আমাদের সদস্য সংখ্যা ২৪ জন। একজন নির্দল সদস্য আমাদের সমর্থন করেছেন। অন্যদিকে বিরোধীদের হাতে রয়েছে কুড়িজন সদস্য। ওরা অন্য খেলা খেলতে চেয়েছিল। কিন্তু সেই খেলাতে সফল হয়ে উঠতে পারেনি। তাই গণ্ডগোল করে দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাতে চাইছে।’ সরকারি নিয়ম মেনেই বোর্ড গঠন হয়েছে বলে দাবি দীনেশের। তবে বিজেপির অভিযোগের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি বিডিও।