রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়নি। কিন্তু দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের ভোট (Lok Sabha Election 2024) নিয়ে অঙ্ক কষা শুরু হয়ে গিয়েছে। শুধু বিজেপি (BJP) নয়, তৃণমূল (TMC) কংগ্রেসও রীতিমতো খাতা-কলমে হিসাব কষছে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ফলাফল এবং পরবর্তী বিধানসভা ও পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল খতিয়ে দেখে কোথায় কোথায় দুর্বলতা রয়েছে, কোথায় ভোট বাড়ানোর প্রয়োজন সেসব প্রক্রিয়া শুরু করেছে তৃণমূল (Darjeeling TMC)। বিজেপি অবশ্য দার্জিলিং ধরে রাখার ব্যাপারে আশাবাদী। তবে প্রার্থী দেখে নিশ্চিত হতে চাইছেন দলের নেতা-নেত্রীরা।
তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষের দাবি, এবার দার্জিলিং তাঁদের দখলে আসবে। ২০১৯ সালের ভোটচিত্রের সঙ্গে বর্তমান সময়কে মিলিয়ে ফেলতে নারাজ পাপিয়া। এবার পাহাড়, সমতলে পুরসভা, পঞ্চায়েত এবং জিটিএ পুরোপুরি তাঁদের এবং জোটসঙ্গী ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার (বিজিপিএম) দখলে। এই অঙ্কেই পরাজয়ের কোনও কারণ দেখছেন না পাপিয়া। অন্যদিকে, কংগ্রেসও পুরোনো আসন পুনরুদ্ধারে আশাবাদী।
প্রদেশ কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক বিনয় তামাং বলছেন, ‘এই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী দিলে জয় নিশ্চিত।’
এবারের ভোটে দার্জিলিং লোকসভা আসন নিয়ে বেশ চর্চা রয়েছে। বিজেপির দখলে থাকা দার্জিলিং এবার ছিনিয়ে নিতে মরিয়া তৃণমূল। ২০১৯-এর ভোটে চোপড়া বাদে বাকি বিধানসভাগুলিতে তৃণমূলের সেভাবে প্রভাব ছিল না। মহকুমা পরিষদ এবং শিলিগুড়ি পুরনিগম বামেদের হাতে ছিল। পাহাড়ে বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল। যার জেরে এই লোকসভার অধীনে থাকা সাতটি বিধানসভার মধ্যে একমাত্র চোপড়ায় তৃণমূল প্রার্থী অমরসিং রাই ৪৪,৭৭৭ ভোটের লিড নিয়েছিলেন।
বাকি ছ’টি বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্ট যে পরিমাণ ভোট পেয়েছিলেন, তাঁর ধারেকাছে কোনও প্রার্থী যেতে পারেননি। পরিণাম হিসাবে রাজু চার লক্ষ ১৩ হাজার ৪৪৩ ভোটের বিরাট ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন। বর্তমানে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ, পুরনিগমে তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে। পাহাড়েও অনীত থাপাদের দখলে জিটিএ, পঞ্চায়েত, পুরসভা। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে পাহাড় জয়ের আশা দেখছে তৃণমূল, বিজিপিএম দু’পক্ষই।
বিজেপির পার্বত্য শাখার সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান মনে করছেন, লোকসভা ভোটের সঙ্গে বাকি ভোটকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। পাহাড়ের মানুষ দাবি পূরণের জন্য এখনও বিজেপিকেই ভরসা করেন। তবে, রাজু বিস্ট পুনরায় প্রার্থী হলে জয়ের ব্যবধান বেশি হবে বলে তাঁর ধারণা।
কংগ্রেস সরাসরি না বললেও এবার বামফ্রন্ট, হামরো পার্টি সহ অন্য আঞ্চলিক দলগুলির সমর্থন পাওয়ার আশায় রয়েছে। বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দার্জিলিংয়ে বাকি সব দল কংগ্রেসকে সমর্থন করুক এমনটাই দাবি নেতৃত্বের। সিপিএমের রাজ্য নেতা জীবেশ সরকারও তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন।