নয়াদিল্লি: আগামী ১৭-১৮ জুলাই দু দিনের ব্যাঙ্গালুরু সামিটের আগে সার্বিক বিরোধী ঐক্য অটুট রাখার মরিয়া চেষ্টায় আপাতত সফল বিরোধী শিবির৷ এর মধ্যে অন্যতম উল্লেখ্যনীয় ভূমিকা গ্রহণ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস, দাবি দলীয় সূত্রে। বিশেষ করে দিল্লি অর্ডিন্যান্স ইস্যুতে কংগ্রেস ও আপ শিবিরের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সমন্বয় সাধন প্রশংসিত হয়েছে বলে দাবি বিরোধী শিবির সূত্রে।
দিল্লি অর্ডিন্যান্স ইস্যুতে সংসদের ভিতরে এবং বাইরে আপ-কে সমর্থন করবে, রবিবার দলের তরফে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে এই ঘোষণা করেছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল৷ এদিন তিনি বলেন, ‘সোমবার বিরোধীদের বৈঠকে অংশ নেবে আম আদমি পার্টি। দিল্লি অর্ডিন্যান্স নিয়ে দলের অবস্থান পরিস্কার। এটা কোনও মতেই সমর্থন করছি না আমরা।’ কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের এই ঘোষণার পরেই ‘নমনীয়’ হয়েছে দিল্লি মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল৷ বিরোধী শিবির সূত্রের দাবি, দিল্লি অর্ডিন্যান্স ইস্যুতে কংগ্রেস-আপ-এর মতপার্থক্য দূর করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রথম সারির নেতৃত্বের তরফে লাগাতার আপ ও কংগ্রেস শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে দু পক্ষের বরফ গলানোর চেষ্টা করা হয়েছে৷
শনিবার বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ যখন দলীয় সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে সরাসরি দিল্লি অর্ডিন্যান্স ইস্যু বা আপের ভূমিকার কথা উল্লেখ না করেই যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর সুরক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের সরকার বিরোধী অবস্থানের কথা জানান তখন ক্ষুব্ধ হয়েছিল আম আদমি পার্টি৷ দলীয় সদর দফতরে সাংবাদিকরা বার বার অর্ডিন্যান্স ও ‘আপ’-এর প্রসঙ্গ উত্থাপিত করার চেষ্টা করলেও জয়রাম টুঁ শব্দটি করেননি। একবারের জন্যেও নেননি ‘আপ’-কে সমর্থন করার কথা। সূত্রের দাবি, স্বাভাবিক ভাবেই এরপর অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দলের তরফে প্রশ্ন তোলা হয় কংগ্রেসের ‘সদিচ্ছা’ নিয়ে৷ ‘আপ’-এর কেন্দ্রীয় নেতা রাঘব চাড্ডা বলেন, ‘এটা একটা বেনজির সাংবিধানিক সংকট। তা নিয়ে এত রাখঢাকের কী প্রয়োজন? কেন সরাসরি প্রসঙ্গ বা সমর্থন উল্লেখ করতে পারছে না কংগ্রেস?’ বলাবাহুল্য পরিস্থিতি ক্রমেই নিম্নগামী হয়ে ওঠে।
সূত্রের দাবি, ব্যাঙ্গালুরু সামিটের আগে শেষ মুহূর্তে আপ-কংগ্রেস টানাপোড়েনে পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে দেখে আসরে নামে তৃণমূল নেতৃত্ব৷ সূত্রের দাবি, এর পরেই তৃণমূলের মধ্যস্থতায় ত্রিপাক্ষিক আলোচনায় স্থির হয় রবিবার কংগ্রেসের তরফে দিল্লি অর্ডিন্যান্স ইস্যুর নাম নিয়ে সুস্পষ্ট ভাবে সরকার বিরোধী অবস্থানের কথা ঘোষণা করা হবে৷ সেই মত রবিবার বিকেলে আপ আদমি পার্টি নীতি নির্ধারণী বৈঠকের কয়েক ঘন্টা আগে কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল দিল্লি অর্ডিন্যান্স ইস্যুতে আপ-কে সমর্থনের কথা জানান৷ ‘আপ’-এর তরফে তাকে স্বাগত জানানো হয়। স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। ঘাম দিয়ে জ্বর নামে তাবড় বিরোধী দলনেতাদের। আগামী দু দিন ব্যাঙ্গালুরু সামিটে দিল্লি অর্ডিন্যান্স ইস্যুতে কতটা কাছাকাছি আসতে পারে কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি-সেদিকেই নজর রাখছে কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক মহল৷