নাগরাকাটা: পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতেই তৃণমূলে গণইস্তফা। তৃণমূল কংগ্রেসের আংরাভাসা দুই নম্বর অঞ্চল কমিটির সভাপতি মনসুর আলির বিরুদ্ধে দল পরিচালনায় একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ এনে শুক্রবার তৃণমূলের ওই অঞ্চলের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের একাধিক পদাধিকারী তাঁদের পদ থেকে গণইস্তফার কথা ঘোষণা করেছেন। পদত্যাগীরা জানিয়েছেন তাঁদের সিদ্ধান্তের কথা দলের ব্লক ও জেলা সভাপতিকে পাঠানোর পাশাপাশি শাখা সংগঠনের সভাপতিদেরও লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। শাসক দলের ব্লক সভাপতি সঞ্জয় কুজুর অবশ্য বলেন, ‘এরকম কোন ইস্তফাপত্র হাতে পাইনি। পেলে খোঁজ খবর নিয়ে তা দেখা হবে।’
যাঁরা পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানানো হচ্ছে, সেই তালিকায় রয়েছেন আংরাভাসা দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা ও কিষাণ খেত মজদুর তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি হেমন্ত রায় ও সাধারণ সম্পাদক রাজু ছেত্রী, অঞ্চল কিষাণ খেত মজদুর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি গৌরাঙ্গ চন্দ্র রায়, সেখানকার যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি গণেশ রায়, এসসি-এসটি ও ওবিসি সেলের অঞ্চল সভাপতি পঞ্চন ওরাওঁ, আইএনটিটিইইসি-র অঞ্চল সভাপতি সুজন প্রধান সহ একাধিক বুথের দলীয় সংগঠনের পদাধীকারী মিলিয়ে মোট ২১ জন নেতা। বিক্ষুব্ধদের পক্ষে ২০১৩-২০১৮ সাল পর্যন্ত নাগরাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদে থাকা কৃষক নেতা হেমন্ত রায় বলেন, ‘অঞ্চল সভাপতি মনসুর আলি যেভাবে দল চালাচ্ছেন তা একনায়কতন্ত্র ছাড়া আর অন্য কিছু নয়। শাখা সংগঠনকে কিছু না জানিয়েই সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। আমাদের অভিজ্ঞতা অনুসারে যা বুঝেছি তিনি একলা চলো নীতি থেকে কোনভাবেই সরে আসতে রাজি নন। প্রত্যেকেই জন্মলগ্ন থেকে দল করছি। সাধারণ কর্মী হিসেবেই দলে থাকবো। নেতৃত্বকে সবকিছু জানানো হয়েছে।’
এদিকে মনসুর আলি তাঁর বিরুদ্ধে তোলা যাবতীয় অভিযোগ এক কথায় খন্ডন করেছেন। তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি থেকে অঞ্চল সভাপতির দ্বায়িত্ব নেওয়ার পর এপর্যন্ত সবাইকে নিয়ে অন্তত ৫০টি সভা করেছি। গত ৬ তারিখেও একটি সভা হয়। সেখানেও শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর ওঁদের এই ঘোষণা কেন।’ তাঁর সংযোজন, পঞ্চায়েতের ১৫টি বুথের প্রার্থীদের নাম বুথ কমিটি থেকে এসেছিল। সেটাই ব্লকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আমার কোন ভূমিকা নেই। প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে বুথ কমিটির কারও কোন সমস্যা নেই। আমার ধারণা প্রার্থীপদকে কেন্দ্র করেই শাখা সংগঠনের ওই নেতাদের যাবতীয় সমস্যা। এখনও চাইছি মিলেমিশে চলতে।’