কোচবিহার: রেড পিওনি, থাউজেন পেটাল, ইয়েলো প্রোরপি, স্নো হোয়াইট, মাইক্রো লোটাস, শিয়াংলি, হোয়াইট পিওনি, গ্রিন অ্যাপেল। ভাবছেন এগুলো কীসের নাম? এগুলো হল পদ্মের বিভিন্ন প্রজাতি। বিশ্বের নানা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এই পদ্ম। কিন্তু এই বিভিন্ন প্রজাতির পদ্ম দেখতে নানা দেশে ঘুরতে হবে না। তা কোচবিহারেই দেখতে পাওয়া যাবে। কোচবিহারের এক কলেজ পড়ুয়া তপু দে প্রায় ৪৫ ধরণের পদ্ম নিজের বাগানে ফুটিয়ে সাড়া ফেলেছেন।
কোনওটা লাল, কোনওটা সাদা। কোনওটার রঙ হলুদ, আবার কোনওটার রঙ গোলাপি। কোনওটা এক্কেবারে ছোট্ট, আবার কোনওটা অনেক বড়। কোচবিহারের পাঁচ তালতলার বাসিন্দা তপু দে নিজের ফুলের বাগানে এরকমই হরেক রকমের পদ্ম ফুটিয়েছেন। পৃথিবীর নানা জায়গার বিভিন্ন প্রজাতির পদ্ম সংগ্রহ করে তাঁর বাগানে চাষ করছে। শুধু চাষই নয়। সেখান থেকে পদ্মের চারা ও শেকড় বিক্রি করে ভালো রোজগারও হচ্ছে এবিএন শীল কলেজের ওই ছাত্রের।
কোচবিহার শহর লাগোয়া পাঁচ তালতলার বাসিন্দা তপু বছরখানেক আগে পদ্মফুল নিয়ে পড়াশোনা ও কাজকর্ম শুরু করেন। কেরল থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে পদ্মের শেকড় নিয়ে আসে। বাড়ির ছাদে সেগুলির পরিচর্যা শুরু হয়। এরপর ধাপে ধাপে আরও শেকড় নিয়ে আসে। পদ্ম খুব দ্রুত হয়। দেড়-দুই মাসের মধ্যেই ফুল পাওয়া যায়। এভাবে নিজের বাগানে হলুদ পদ্ম, লাল পদ্ম, কাবেরি পদ্ম, রেড পিওনি, থাউজেন পেটাল, ইয়েলো প্রোরপি, স্নো হোয়াইট পদ্ম, মাইক্রো লোটাস, শিয়াংলি, হোয়াইট পিওনি, গ্রিন অ্যাপেল সহ নানা ধরণের পদ্ম ফুটিয়েছে। পাশাপাশি এখনও পর্যন্ত প্রায় হাজারখানেক পদ্মের শেকড় ও চারা বিক্রি করেছে সে। কোচবিহারের পাশাপাশি কুরিয়ার মারফত কলকাতা, আগরতলা এমনকি গুজরাটেও সে শেকড় রপ্তানি করেছে।
তপুর কথায়, ‘পদ্মের চাষ খুব একটা কঠিন কিছু নয়। শেকড় থেকেই চারা তৈরি করে নেওয়া যায়। বড় জলের পাত্রে তিন ভাগ কাদামাটি ও উপরের একভাগ অংশজুড়ে জল রাখতে হবে। সেখানে শেকড় রাখতে হয়। ভার্মি কমপোস্ট দিয়ে পাত্রটি নিয়মিত রোদে রাখতে হবে। ধীরে ধীরে সেখান থেকেই গাছ হবে। নিয়মিত যত্ন করলে দেড়-দুইমাসের মধ্যেই ফুলের দেখা মিলবে। বহু প্রজাতির পদ্ম থাকলেও এখন পদ্মের চাষ খুব একটা দেখা যায় না। অনেক প্রজাতির পদ্ম ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। তাই অনেক ধরণের পদ্ম একসঙ্গে চাষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফুলচাষিরা যদি বড় জায়গায় বেশি করে চাষ করেন তাহলে তাঁরাও উপকৃত হবেন।‘