নীহাররঞ্জন ঘোষ, মাদারিহাট: নিউ জলপাইগুড়ি-বালুরঘাটগামী ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনে চোখে পড়বে একশৃঙ্গ গন্ডারের(One-horned Rhinoceros) ছবি। শুধু ইঞ্জিনে ছবি নয়, ইঞ্জিনটির নামকরণও হয়েছে জলদাপাড়ার(Jaldapara) নামে। জলদাপাড়ার বিখ্যাত একশৃঙ্গ গন্ডারকে স্বীকৃতি দিতে এই অভিনব ভাবনা রেলের। জলদাপাড়া তথা উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যকে সারা ভারতের সামনে তুলে ধরতে এই উদ্যোগ।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের নামে একটি ঝাঁ চকচকে লোকোমোটিভ ইঞ্জিন দেশের জন্য উৎসর্গ করল। গোটা একটা ডিজেল ইঞ্জিনের নামকরণ করা হল জলদাপাড়ার নামে এবং ইঞ্জিনের গায়ে আঁকা হয়েছে জলদাপাড়ার বিখ্যাত একশৃঙ্গ গন্ডারের ছবি। জলদাপাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইঞ্জিনে গাঢ সবুজ, নীল এবং কালো রংয়ের ব্যবহার করা হয়েছে। সবুজ রং দিয়ে জঙ্গল এবং নীল রং দিয়ে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা তোর্ষা নদীকে বোঝানো হয়েছে। কালো রং দিয়ে আঁকা হয়েছে বিশালাকার একটি গন্ডার। এই কাজের দায়িত্ব পেয়েছিলেন বাবাই দে, বিক্রম ছেত্রী এবং সৌরভকুমার দাস। তাঁদের কাজ সবার পছন্দ হওয়ায় খুশি তাঁরা।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘জলদাপাড়ার দিকে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে রেলের এই ভাবনা। গন্ডার সংরক্ষণে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান দেশের মধ্যে অন্যতম।’
দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকে জলদাপাড়া চেনাতে এই ইঞ্জিনটি শুধুমাত্র একটা নির্দিষ্ট রুটের ট্রেনের সঙ্গে চলবে না। আপাতত নিউ জলপাইগুড়ি থেকে বালুরঘাটগামী ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে এই ইঞ্জিনটি লাগানো থাকবে। পরে অন্য ট্রেনের সঙ্গে ইঞ্জিনটি যুক্ত হবে।
আলিপুরদুয়ার পর্যটন ব্যবসায়ীরা রেলের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। আলিপুরদুয়ার ডিস্ট্রিক্ট ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘ভারতীয় রেল যে জলদাপাড়ার বিখ্যাত একশৃঙ্গ গন্ডারকে এভাবে স্বীকৃতি দিল, সেটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এতে জলদাপাড়ার পরিচিতি বাড়বে।’
কয়েকদিন আগে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর ঐতিহ্যবাহী হলং বনবাংলো ভস্মীভূত হয়ে যায়। সেই বনবাংলো ফের তৈরি হবে কি না, সেটা সময়ই বলবে। কিন্তু রেলের এই উদ্যোগের মাধ্যমে জলদাপাড়ার গন্ডাররা বেঁচে থাকবে। বনকর্তারাও রেলের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন।