নয়াদিল্লি: পঞ্চায়েত নির্বাচনে কী মুখোমুখি ‘দিদি’ ও ‘ভাই’? তীব্র জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলে। জাতীয় রাজনৈতিক মহলে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আপ সুপ্রিমো তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সুসম্পর্কের কথা সর্বজনবিদিত। আগামী ২৩ জুন পটনার বিরোধী বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা দুজনেই। এই আবহে জল্পনা তৈরি হয়েছে আম আদমি পার্টির নাম নিয়ে ১৩ জন অজ্ঞাত পরিচয় প্রার্থী রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন পেশ করাকে কেন্দ্র করে। বিষয়টি নিয়ে ‘আপ’-এর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তুমুল অস্বস্তিতে পড়লেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিবির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে নারাজ।
বস্তুত, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল আগেই ঘোষণা করেছিল তারা বাংলার পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী দেবে না। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্কের খাতিরেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছিল আপ-র তরফে। তারপরেও কিভাবে গ্রাম পঞ্চায়েতে ৯ জন এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে ৪ জন অর্থাৎ মোট ১৩ প্রার্থী আপের নাম করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে উদ্যোগী হয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন জেগেছে আপ-র কেন্দ্রীয় নেতাদের মনেও। এই প্রসঙ্গে শনিবার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে আপ-র কেন্দ্রীয় নেতা সঞ্জয় বসু বলেন, ‘রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আমাদের দলের নামে মনোনয়ন পেশের খবর আমরা পেয়েছি। কেউ কেউ অতি উত্সাহে এই কাজ করে থাকতে পারেন। কিন্তু তারা ভুলে যাচ্ছেন, ভোটে লড়াই করতে গেলে ফর্ম বি প্রয়োজন, যেখানে দলের তরফে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে ভোটে লড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। এই মর্মে আগেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে যে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে কোনও ভোটেই প্রার্থী দেবে না আমাদের দল। আমরা লড়ব না মানে লড়ব না, দলের সিদ্ধান্তই শেষ কথা।’ নয়াদিল্লিতে ‘আপ’-এর তরফে জানানো হয়েছে তারা রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে চিঠি লিখে জানাচ্ছেন অবিলম্বে এই ১৩ জন প্রার্থীকে চিহ্নিত করে পুলিশে অভিযোগ জানানো হোক, কারণ এরা আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের প্রতিনিধি নন। বিষয়টির মধ্যে চক্রান্ত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না আপ নেতৃত্ব।
তৃণমূল শিবির অবশ্য গোটা বিষয়টিকে লঘু করেই দেখছে। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন বলেন, ‘এটা বড় কোনও বিষয়ই নয়। আপ রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটে লড়তে চাইলে তাদের আমরা স্বাগত জানাবো। বাংলায় যে গণতন্ত্র আছে এটা তারই প্রমাণ। বাম আমলে এটা ভাবাও যেত না। ভোটে লড়ার অধিকার আছে সবার। বাংলায় তৃণমূল সরকারের কার্যকালে সেই অধিকারকে মান্যতা দেওয়া হয়।’ বর্ষীয়াণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় জানান, বিষয়টি শুনেছি। তবে এটা কোনও ইস্যু বলে মনে হয় না। তাই মন্তব্য নিস্প্রয়োজন। আপ নেতৃত্ব এই বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।’