উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ রবিবার একদিকে যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনে ব্যস্ত ছিলেন, ঠিক তখনই দিল্লিতে কুস্তিগিরদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তিতে উত্তাল হয় দিল্লির যন্তরমন্তর এলাকা। কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ চরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার প্রতিবাদে এদিন সংসদ ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন কুস্তিগিররা। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এই ঘটনায় দিল্লি পুলিশ আটক করে ভিনেশ ফোগাট, সাক্ষী মালিক এবং বজরং পুনিয়া সহ বেশ কয়েকজন কুস্তিগীরকে। ঘটনার নিন্দায় সরব হয় গোটা দেশ। ইতিমধ্যেই দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টার অভিযোগ এনে ধৃত প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয় গোটা দেশ। যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ চরণ সিংয়ের গ্রেপ্তারের দাবিতে রবিবার নতুন সংসদ ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন কুস্তিগিররা। এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন অলিম্পিক্সে পদক জয়ী সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়া ও ভিনেশ ফোগাটরা। এই অভিযানের পুলিশি অনুমতি পায়নি আন্দোলনকারী কুস্তিগিররা। এদিন যন্তর মন্তর থেকে প্রতিবাদ মিছিল সংসদ ভবনের উদ্দেশে এগোতেই আটকে দেয় পুলিশ। আর তারপরই সৃষ্টি হয় বিশৃঙ্খলা। পুলিশের সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন সাক্ষী মালিক, ভিনেশ ফোগাট, বজরং পুনিয়ারা। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলেই শুরু হয় ধস্তাধস্তি। আটক করা হয় সাক্ষী, পুনিয়া সহ বহু আন্দোলনকারীকে। এই ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। কুস্তিগিরদের আটকের কয়েক ঘন্টা পর বিভিন্ন জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
এফআইআর-এর প্রতিক্রিয়ায় ভিনেশ ফোগাট বলেছিলেন যে একটি নতুন ইতিহাস লেখা হচ্ছে। টুইট করে তিনি জানিয়েছেন, “দিল্লি পুলিশ ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির জন্য এফআইআর দায়ের করতে সাত দিন সময় নেয় কিন্তু শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার জন্য আমাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে সাত ঘণ্টাও সময় নেয়নি পুলিশ। দেশ কি স্বৈরাচারে পতিত হয়েছে? সরকার তার খেলোয়াড়দের সঙ্গে কেমন আচরণ করছে তা পুরো বিশ্ব দেখছে। একটি নতুন ইতিহাস লেখা হচ্ছে,”
টুইট করে পুলিশ হেপাজত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পুনিয়াও। টুইট করে তিনি জানান, “পুলিশ আমাকে তাদের হেফাজতে রেখেছে। কিছু বলছে না। আমি কি কোন অপরাধ করেছি? ব্রিজভূষণের জেলে থাকা উচিত ছিল। কেন আমাদের কারাগারে রাখা হয়েছে? প্রশ্ন পুনিয়া বজরং-এর।
সূত্রের খবর, গতকালের দিল্লির ঘটনায় পুলিশ ধৃত কুস্তিগিরদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে। এই মামলা গুলির মধ্যে রয়েছে, দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা (ধারা ১৪৭), বেআইনি সমাবেশ (ধারা ১৪৯), সরকারি কর্মীদের দায়িত্বপালনে বাধা দেওয়া (ধারা ১৮৬), স্বেচ্ছায় নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর আঘাত করা (ধারা ৩৩২) সহ রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি ধারা।